বাংলার ভোর প্রতিবেদক
অপহরণ, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ৪ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আলাদা মামলা হয়েছে।

যশোর শহরের কসমেটিক ও কেবল ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন পনি ও চাঁচড়ার মাছের পোনা ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেনকে অপহরণ, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় আদালতে পৃথক এ মামলা হয়েছে।

সোমবার শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার মুরাদ হোসেন পনি ও ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেনের মা রহিমন বেগম বাদী হয়ে পৃথক এ মামলা করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া পনির অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে। অপর মামলার অভিযোগের তদন্ত করে সিআইডি পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন একই বিচারক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উভয় বাদীর আইনজীবী এমএ গফুর ও রুহিন বালুজ।

মামলার আসামিরা হলেন, চাঁচড়া ফাঁড়ির সাবেক এসআই জামাল, সদর ফাঁড়ির সাবেক টিএসআই রফিক, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবীর সুমন ওরফে হাজী সুমন, শহরের রায়পাড়া কয়লাপট্টির সার্জেন্ট বাবু ও চাঁচড়ার খায়রুজ্জামান বাপ্পি।

অপর মামলার আসামিরা হলেন, চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এসআই মাসুদুর, কোতয়ালি থানার সাবেক পরিদর্শক রকিবুল হাসান, কনস্টেবল দেবাশীষ ও কনস্টেবল কাইরুল।

পনির মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মুরাদ হোসেন পনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে শহরের বড় বাজারে সুনামের সাথে কসমেটিক ও কেবল ব্যবসা করে আসছেন। কাউন্সিলর হাজি সুমনের সাথে বিরোধের জের ধরে তার পরিকল্পনায় ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট রাতে এসআই জামাল ও টিএসআই রফিকের নেতৃত্বে মুরাদের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে ধরে থানায় নিয়ে রাখে। ওই রাতে স্বজনরা মুরাদকে ছাড়াতে গেলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় মুরাদকে ক্রসফায়ার দেবে বলে হুমকি দেন।

পরদিন ৩০ আগস্ট সকালে থানায় গিয়ে স্বজনরা অনুনয় বিনয় করলে ১২ লাখ টাকা দিলে মুরাদকে ছাড়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ১ সেপ্টেম্বর সকালে থানায় গিয়ে ওই দুই অফিসারকে ১২ লাখ টাকা দিলে গুরুতর আহত অবস্থায় মুরাদকে ছেড়ে দেন। দুইদিন থানায় আটকে রেখে ১২ লাখ টাকা চাঁদা নিলেও পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় তিনি মামলা করতে পরেননি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।

অপরদিকে রহিমন বেগমের মামলার অভিযোগে জানা গেছে, সাব্বির হোসেন চাঁচড়া বাজারে মাছের পোন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। চাঁচড়া ফাঁড়ির এসআই মাসুদুর অপরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে সাব্বিরের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তাকে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার দিকে আসামিরা ব্যবসায়ী সাব্বিরের বাড়ি থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাদের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা সদরের মালঞ্চী ফাঁকা মাঠের মধ্যে নিয়ে সাব্বিরকে ক্রসফায়ার দেবে বলে মোবাইল ফোনে জানায়।

সাব্বিরকে রক্ষা করতে ওই রাতে ৫ লাখ টাকা নিয়ে মালঞ্চী ফাঁকা মাঠে নিয়ে আসামিদের হাতে দেয়া হয়। আসামিরা সাব্বিরকে ছেড়ে না দিয়ে হাত পা ভেঙ্গে ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে চালান করে। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তখন মামলা করা যায়নি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version