বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে এক বিএনপি কর্মীকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে কোতোয়ালি থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ সিকদার আক্কাস আলী, ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার মামলাটি করেছেন শংকরপুর ইসহাক সড়কের বিএনপি কর্মী আশহাবুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন ইসলাম। অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া কোতোয়ালি থানায় ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ। অন্য আসামিরা হলেন, কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই শোয়েব উদ্দিন, এসআই জামাল, এসআই মিরাজ মোসাদ্দেক, শংকরপুর ইসহাক সড়কের শাহাদতের ছেলে জাহাঙ্গির ও ইনতাজের ছেলে আলমগীর।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আশহাবুল ইসলাম বিএনপির সক্রিয় কর্মী। ২০১৫ সালের ৬ মে মধ্য রাতে তার বাড়িতে পুলিশ সদস্য আসামিরা অভিযান চালায়। এসময় তার স্বামীকে আটক করে গাড়িতে উঠায়। এরপর আশহাবুলের চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেধে ফেলে। তার স্বামীকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখে। পরের দিন সকালে বাদী কোতোয়ালি থানায় যেয়ে ওসির কাছে তার স্বামী কোথায় জানতে চান। কিন্তু উত্তরে ওসি জানায় তারা জানেন না।
বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দপ্তরে যেয়েও তার স্বামীর সন্ধান তিনি পাননা। এর মাঝে ৮ মে দুপুরে কাউন্সিলার গোলাম মোস্তফা, জাহাঙ্গির ও আলমগীর তার বাড়িতে যান। তারা জানায় আশহাবুলকে ফিরে পেতে চাইলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান তারা। একপর্যায় স্বামীকে ফিরে পেতে ছয়লাখ টাকায় চুক্তি হয়।
বাদী তার সোনার গহনা বিক্রি ও ধার দেনা করে ছয় লাখ টাকা নিয়ে কাউন্সিলার গোলাম মোস্তফাকে সাথে নিয়ে ওসি আক্কাসের হাতে তুলে দেন। এরপর আটকের চার দিন পর ১০ মে আশহাবুলকে থানায় নিয়ে আসে। এবং একটি বিস্ফোরক মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।
এসব বিষয়ে মামলা করলে আশহাবুলকে চিরতরে গুমের হুমকি দেয়। এরপর থেকেই তারা নিশ্চুপ ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি আদালতে এ মামলা করেন। আদালত এ অভিযোগ কোতোয়ালি থানার ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এদিকে অভিযুক্ত অনেকেই বলেছেন তারা এ ঘটনার সাথে কখনোই জড়িত না। শুধুমাত্র ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের আদেশে কর্তব্যরত ডিউটি পালন করেছি।