বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
যশোরের অভয়নগরে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোট ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগের আলোচিত মামলায় বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আসাদুজ্জামান জনি ও তার বাবা কামরুজ্জামান মজুমদারকে প্রধান অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

অভয়নগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সালাহউদ্দিন খান ১০ জনকে অভিযুক্ত করে এ চার্জশিট দাখিল করেন। এছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, গুয়াখোলা কলেজ রোডের কামরুজ্জামান মিঠু, গুয়াখোলা গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমানে দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা এনায়েত হোসেন শান্টু, কোটা পূর্ব পাড়ার বায়েজিদ হোসেন তরফদার, কোটা গ্রামের মারুফ হাসান তুহিন, নওয়াপাড়া বউ বাজার এলাকার রুহুল আমিন, গুয়াখোলা সুপারিপট্টির সম্রাট হোসেন বাবু, ধোপাদি দপ্তরি পাড়ার বাসিন্দা মফিজুর রহমান ও বুইকরা গ্রামের সৈকত হোসেন হিরা।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, গত ৩ আগস্ট ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। শুরুতে ৬ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তে আরও ৪ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এজাহারভুক্ত ও তদন্তে প্রকাশ পাওয়া মোট ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আসামি সৈকত হোসেন হিরা কৌশলে ব্যবসায়ী টিপুকে আসাদুজ্জামান জনির অফিসে নিয়ে যান। সেখানে জনি তাকে মারধর করে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২ কোটি টাকা দাবি করেন। পরে টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে জনির প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে আরটিজিএসের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পাঠান। টাকা পাওয়ার পর সেদিন টিপুকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর আবারও টিপুকে আটক করা হয়। ওই দিন সকালে গ্রামের বাড়ি চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে বাজারে যাওয়ার পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের সামনে তার গতিরোধ করেন সৈকত হোসেন হিরা। পরে তাকে জনির কণা ইকো পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জনি, সম্রাট হোসেন বাবু ও মফিজুর রহমান অস্ত্র ঠেকিয়ে টিপুকে মারধর করেন এবং বুক পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালুচাপা দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আরও ২ কোটি টাকা দাবি করেন।

চাপের মুখে টিপু তার ম্যানেজারকে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। পরে ম্যানেজার পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে পাঠান। একই সঙ্গে মফিজুর রহমানের কাছ থেকে আরও এক কোটি টাকার একটি চেক আদায় করা হয়।

Share.
Exit mobile version