বাংলার ভোর ডেস্ক
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস আজ। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স এগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়্যারেন্স’ সম্মেলনে যে আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয় তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস বলে ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর ৩০ আগস্ট গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপি। আর গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি আছেন সাধারণ লোকজনও।
এদিকে, গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। তাছাড়া জোরপূর্বক গুম থেকে সব নাগরিকের সুরক্ষা এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও শনাক্তেরও দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করায় অন্তর্র্বতী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০০৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৬২৯ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলেও জানিয়েছে আসক।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক জানিয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে লাশ উদ্ধার হয়েছে ৭৮ জনের। অপহরণের পর ছেড়ে দেওয়া হয় ৫৯ জনকে এবং পরর্র্বতী সময়ে ৭৩ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকি ব্যক্তিদের এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার।
কমিশনকে তদন্ত করে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আসক মনে করে, সমাজে যে ভীতি এবং দায়মুক্তির অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর এবং এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সেই অপসংস্কৃতি থেকে উত্তরণে একটি দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
গুমের মতো অমানবিক অভিযোগ উত্থাপনের শুরু থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়মিতভাবে ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ সব দাবি জানিয়ে আসছিল আসক। আসক বিশ্বাস করে, নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
আসক আরও জানায়, জোরপূর্বক গুম থেকে সব নাগরিকের সুরক্ষা এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, শনাক্ত ও জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। গুম সংক্রান্ত অভিযোগ দায়েরের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে।