# যশোর পৌরসভার ১২টি ডিলার নিয়োগের জন্য উন্মুক্ত লটারি আজ
# পূর্ব বারান্দীপাড়া একটি ডিলারশিপপের বিপরীতে লড়ছেন ৩৩ জন
# বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের আবেদনের হিড়িক
শেখ জালাল
যশোরে খাদ্য বিভাগের ২৭৬টি খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একটি ডিলার লাইসেন্সের বিপরীতে গড়ে ২০ জনের আবেদন পড়েছে। লটারির মাধ্যমে ডিলার চূড়ান্ত করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে যশোর পৌরসভার ১২টি ডিলার নিয়োগের জন্য উন্মুক্ত লটারি অনুষ্ঠিত হবে।
জানা যায়, ২০২৪ সলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সব চলমান ডিলারদের নিয়োগ বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৩ অক্টোবর জেলা ওএমএস কমিটির সভায় নতুন করে এসব ডিলারশিপ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ লক্ষ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ২৪ অক্টোবর ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ৪ নভেম্বর ফরম জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল।
ডিলারশিপের জন্য আগ্রহী ২৪৩ জন আবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে নতুন ডিলার নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ। ২০২৪ সালে ওএমএস ডিলারদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করায় নতুন ডিলারশিপ নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। রিটের শুনানি শেষে ওএমএস ডিলারশিপ বাতিলের আদেশ স্থগিতসহ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশের পূর্বের ডিলারগণকে বহাল রাখার আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই সময়সীমা পার হওয়ায় নতুন ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছে জেলা খাদ্য বিভাগ।
যশোর পৌর এলাকায় ১২টি ওএমএস ডিলার নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। ওই স্থানে নতুন ডিলারশিপের জন্য আবেদন পড়েছে ২৪৩টি। প্রত্যেকটি ডিলারের বিপরীতে গড়ে আবেদন পড়েছে ২০টি। আবেদনকারীদের অধিকাংশ বিএনপি ও জামায়াতের অনুসারী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। নতুন আবেদনগুলো মূল্যায়ন করছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস। প্রাথমিক যাচাই বাছাই শেষে আজ বৃহস্পতিবার লটারির মাধ্যমে ওএমএস ডিলারশিপ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান।
নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বাজার দর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশনের আওতায় খোলা বাজারে খাদ্য শস্য বিক্রয় (ওএমএস) কার্যক্রমে চাল ও আটা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই অনুযায়ী সারাদেশে ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে অসহায় ও দরিদ্র মানুষ চাল ও আটা ক্রয় করে আসছে। সরকারি বেঁধে দেয়া দরে ডিলাররা জনপ্রতি ৫ কেজি আটা (প্রতি কেজি ২৪ টাকা) ও ৫ কেজি চাল (প্রতি কেজি ৩০ টাকা) বিক্রি করছেন। ডিলাররা ৫ দিন নিয়মিত খাদ্যপণ্য বিক্রি করেন।
খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, যশোরে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১২ ডিলার নিয়োগের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ২৪৩টি। শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড (ফুলতলা-বটতলা) এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ৩৩ জন, ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে (রাজুর মোড়, ছোট বউ বাজার) এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ১৫ জন। খালধার রোড-লোন অফিস পাড়া বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ২৫ জন। ঘোপ জেলখানা রোড এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ১১ জন। কাঁঠালতলা এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ২৩ জন। এম এম কলেজ খড়কি কবরস্থান এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ২৩জন। পিটিআই রোড এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আদেন করেছেন ১৯ জন।
তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ১৬জন, টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ৩০ জন। বেজপাড়া গুলগুল্লার মোড় এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ২১ জন, বকচর হুশতলা খুলনা রোডে এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ১৭ জন। ঝুমঝুমপুরের বিসিক এলাকায় বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলারশিপপের জন্য আবেদন করেছেন ১০ জন। আবেদনকারীদের অধিকাংশই বিএনপি ও জামায়াতের অনুসারী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান জানান, শহরের গরীব মানুষের মাঝে খাদ্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম যাতে ব্যহত না হয়, সেজন্য আজ বৃহস্পতিবার নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য লটারী আনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন আবেদনগুলো জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস মূল্যায়ন করছে। নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য আবেদনগুলোকে লাইসেন্স দেয়ার জন্য বিবেচনা করা হবে। প্রাথমিক যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আজ লাটলির মাধ্যমে ওএমএস ডিলারশিপ নির্ধারণ করা হবে।