বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে গত এক সপ্তাহে যশোরের মোট তিনজন রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ও একজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের আবু দাউদের ছেলে মহিদুল ইসলাম (৪৫), মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের ঝাঁপা গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মজিদ (৪৫) ও হানুয়ার গ্রামের আমিন উদ্দিন সরদারের ছেলে মিন্টু হোসেন (৪৫)।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের আবু দাউদের ছেলে মহিদুল ইসলাম (৪৫) গত রবিবার (১০ নভেম্বর) একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মরহুম মহিদুল ইসলাম দুই সন্তানের জনক। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক এ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের ঝাঁপা গ্রামের আব্দুল মজিদও (৪৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতের কোনো এক সময় ঘুমের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন। মরহুম মজিদ তিন সন্তানের জনক।
জানা গেছে, মজিদ গত ৫-৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করতেন তিনি। রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমান মজিদ। এই রাতের কোনো এক সময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে কাজে যাওয়ার জন্য তার সঙ্গীরা তাকে ডাকাডাকি করেন। তখন মৃত অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখতে পান তারা। সংবাদ পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালে হিমঘরে রয়েছে। আব্দুল মজিদের মৃত্যুর বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু মুছা ও প্রতিবেশি আরিফ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
আরও একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা মিন্টু হোসেন (৪৫) পেনাং শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মালয়েশিয়ার একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। স্থানীয় ইউপি সদস্য খালেদুর রহমান টিটো এ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত মিন্টু হোসেন মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের আমিন উদ্দিন সরদারের ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়ায় যান মিন্টু হোসেন। মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করতেন তিনি। জানা যায়, গত ২-৩ নভেম্বর অর্থাৎ ১১-১২ দিন আগে কাজে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন মিন্টু হোসেন। সেই থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালেই মৃত্যুবরণ করেন। মরদেহ তিনটি বাংলাদেশে আনার সকল আইনি প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
তিনজন তরতাজা রেমিট্যান্স যোদ্ধার অকালমৃত্যুতে প্রতিটি পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের স্বজনেরা অপেক্ষায় আছেন তাদের প্রিয়জনের লাশের জন্য। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।