বাংলার ভোর প্রতিবেদক
কাজ করে দিতে পাকা কলার উৎকোচ নেয়ার কথা স্বীকার করায় যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে। রোববার যশোরে অনুষ্ঠিত গণশুনানি চলাকালে দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী এ নির্দেশনা দেন। অবশ্য অভিযোগকারী রুস্তম আলীর দাবি তার কাছ থেকে পাকা কলা ছাড়াও ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন ওই কর্মকর্তা। এরপর আরো ৬ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। যা না দেয়ায় জেলা পরিষদের জমির ডিসিআর অন্যকে দিয়ে দেন।
‘রুখবো দুর্নীতি, গড়বো দেশ; হবে সোনার বাংলাদেশ শীর্ষক’ এ গণশুনানি আজ রোববার যশোর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সময়ের সাথে দুর্নীতির ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে মন্তব্য করে শুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, ‘যতই দিন যাচ্ছে, ততই দুর্নীতি বাড়ছে। দুর্নীতির ধরণ চেঞ্জ হচ্ছে। মানুষ পারাপার করেও টাকা আদায় করা যায়, দুর্নীতি করা যায় এই যশোরে এসে নতুন দুর্নীতির ধরণ শুনলাম। স্বৈরাচারের দোসর হোক, মামলার আসামি হোক, তারা যশোরের রাজনীতির এলিটদের মাধ্যমে ভারতে পার হচ্ছে। এটা যদি হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রত্যাশা বিঘ্নিত হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। দুদক দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারবে এটা প্রত্যাশিত না। তবে কমানো যাবে। আমরা শুনানির মাধ্যমে জনগণকে কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করে দিচ্ছি না। আমি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পৃক্ততা তৈরি করছি। এতে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে।’
দুর্নীতির কারণেই বিগত সরকার পতন হয়েছে মন্তব্য করে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, সুষ্ঠু ও আনন্দঘন পরিবেশে নির্বাচন হবে, সেটায় সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশটাকে ভালো রাখতে সৎ প্রার্থীকে বাছাই করতে হবে। আমরা যদি ১৫ বছরের ইতিহাস দেখি, সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছিলো দুর্নীতি। বিগত সরকারের এই অবস্থা হওয়ার পিছনে ছিলো দুর্নীতি। ফলে দুর্নীতিগ্রস্তকে বেছে নিবেন না। সেটিই হবে রাষ্ট্রের প্রতি সুবিচার। এই যশোর থেকে ন্যায়ের ও দুর্নীতি মুক্ত যাত্রাটা শুরু হবে।’
জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের আয়োজনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। শুনানি মডারেটর করেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। শুনানিতে জেলার সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৩৭টি দপ্তরের ৭৫ টি অভিযোগের উপর শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও কিছু বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।

