♦পুলিশের দাবি বাইসাইকেলটি চোরাই

♦এসআইয়ের সাথে টাকা আদায়ে ওসির বন্ধু

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাংড়ি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও আটকের ভয় দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। গত ২১ মার্চ ঘটনাটি ঘটলেও তিনি ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম কালীগঞ্জ শহরের পৌরসভার সামনে পুরাতন জিনিসপত্র কেনা-বেচা করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আতংকিত হয়ে পড়েন ওই ব্যবসায়ী।

তবে পুলিশের দাবি, বাইসাইকেলটি চুরি যাওয়া। সেই সাইকেল উদ্ধার করে দিয়ে দেয়া হয়েছে। কোন প্রকার টাকার লেনদেন হয়নি।

শুক্রবার ফরিদুল ইসলাম বলেন, গত ২১ মার্চ ২৫০ টাকায় একটি পুরাতন বাইসাইকেল ওজনে কেনেন তিনি। পরে কালীগঞ্জ থানার এস আই সিরাজ তাকে ফোন দিয়ে বলেন তোমার কাছে ভাঙ্গা কোন সাইকেল আছে। উত্তরে হ্যা বলায় সন্ধ্যার পর সাইকেলটি দিয়ে যাওয়ার জন্য পোন দেন এসআই মাখন। পরে সন্ধ্যার দিকে এস আই প্রতিকসহ কয়েকজন পুলিশ আসে। এ সময় ওসির এক ভাইও ছিল। দোকান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি স’মিলে নিয়ে যান এসআই প্রতিক। তখন এসআই প্রতিক তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখান। ওসি আপনার নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবে। তুমি চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে আছো। তোমাকে টেনে-হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে ওসি স্যার।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই প্রতিক। এর দুই মিনিট পরে ওসির ভাই (জুম্মন-ওসির বন্ধু) পরিচয় দেয়া একজন ৩০ হাজার টাকা দিতে বলেন। এরপর কথা বললেই টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা। তিনি মানসম্মান বাঁচাতে সাথে সাথে ৩০ হাজার টাকা এসআই প্রতিককে দেন ও পরের দিন ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। আমাকে ব্লাকমেইল করে টাকাগুলো নিয়েছে। পরে সেই সাইকেলও নিয়ে যায় পুলিশ।

ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি দীর্ঘদিন এই ভাংড়ি ব্যবসার সাথে জড়িত। তার এই দোকানে ৩০ জনের বেশি কাজ করে। তারা সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে পুরাতন প্লাস্টিক ও লোহার জিনিসপত্র কিনে আনে। সেটা তার কাছে বিক্রি করে চলে যায়। তিনি কোন চোরাই সিণ্ডিকেটের সাথে জড়িত না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই প্রতিক কুমার মুঠোফোনে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। কথার একপর্যায়ে বলেন, ব্যবসায়ী ফরিদুল একটা চুরি যাওয়া সাইকেল কিনেছিলেন। সেই সাইকেল উদ্ধার করে তাকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এখন ডিউটিতে আছি। পরে আপনার সাথে দেখা করবানে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ জানান, বিষয়টি শুনে তিনি ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুলকে থানায় ডেকেছিলেন। ওই ব্যবসায়ী আগামী ৩০ তারিখে বিস্তারিত কথা বলবেন। তবে পুলিশের কেউ টাকার লেনদেন করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার সাথে এক বন্ধু থাকে, ভাই না। সে প্রতিকের সাথে ওই দিন যায়নি বলেও দাবি করেন।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version