♦ বিচারকের বাবা পেয়েছেন বয়স্ক ভাতা
♦ প্রতিবন্ধী না হয়েও পাচ্ছেন ভাতা
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এ সকল ভাতা প্রদান করছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা উপজেলার ১নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রদান করেন। যা নিয়ে ইউনিয়ন জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। ইউনিয়নের ডুমুরতলা গ্রামের আনসার আলীকে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দেয়া হয় বয়স্ক ভাতা কার্ড। আনসার আলী ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত ঝিনাইদহ ডিসি অফিসের প্রসেস সার্ভেয়ার পদে কর্মরত থেকে অবসরে যান। বর্তমানে নিয়মিত তিনি পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন। তার এক ছেলে একটি জেলার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে কর্মরত এবং আরেক ছেলে বেসরকারি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আনসার আলী প্রতিষ্ঠিত একজন স্বচ্ছল মানুষ হয়েও বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়া নিয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও সুন্দরপুর-দুর্গাপুর গ্রামের রফিউদ্দিন বিশ্বাস সচ্ছল ব্যক্তি হয়েও পেয়েছেন বয়স্ক ভাতার কার্ড। এদিকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের ক্ষেত্রেও অনিয়ম করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ওজুফা বেগমের ছেলে রানা হোসেন, জাফর মন্ডল, সাজ্জাদ মন্ডলকে অনিয়মের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রদান করেন। ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী শাহজাহান আলী ও সুবর্ণা আক্তার উপকারভোগীদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডগুলো করে দিয়েছেন।
বয়স্ক ভাতাভোগী আনসার আলী জানান, ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান তাকে আবেদন করতে বলেন অনলাইনে। আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি ভাতা ভোগীর আওতায় এসেছেন এবং ঈদের আগে টাকাও পেয়েছেন।
প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী সাজ্জাদ মন্ডল জানান, পায়ে প্রায়ই ব্যথা অনুভব করি এবং মাঝে মাঝে ফুলে ওঠে। এই কারণে মহিলা ইউপি সদস্য ওজুফা আমার একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, আমার গ্রামের দুইজনকে বয়স্ক ভাতা ও তিনজনকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী না হয়েও তারা প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। সেই কার্ডগুলো করা হয়েছে সরকারি নিয়মের বাইরে। এই কার্ডগুলো প্রকৃত বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীরা পাননি অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বর তাদেরকে সুপারিশ করে অনলাইনে আবেদন করায়। অনলাইনে তিনি আবার সেটা দেখে ঢাকা অফিসে পাঠিয়ে দেন। তবে পুনরায় আবার খতিয়ে দেখব। যদি অনিয়ম হয় তাহলে তাদের কার্ড বাতিল বলে গণ্য হবে।