# ভিকটিম হিন্দু নারীর মামলা দায়ের, প্রধান অভিযুক্ত গ্রেফতার
# বিচার হবে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দিয়ে: আইন উপদেষ্টা
# ভিডিও সামাজিক মাধ্যম থেকে সরাতে নির্দেশ আদালতের
বাংলার ভোর ডেস্ক
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের অভিযোগে এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণ ও নগ্ন শরীরে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সারাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে; মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রামে ওই নারীর পিতার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ভিকটিম নারী মামলা দায়ের করেছেন। প্রধান অভিযুক্ত ফজর আলীকে রোববার ভোর ৫টার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের পূর্বপাড়ার শহীদ মিয়ার ছেলে। তার আগে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ওই গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।
মামলায় বলা হয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই নারী বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর ওই নারীর বাবা-মা বাড়ির বাইরে যান। তখন ফজর আলী বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে স্থানীয়রা এসে ফজর আলীকে ধরে মারধর করে এবং কেউ কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়।
ওই নারী বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় ঘটে। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে প্রবেশ করে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খান জানান, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয় এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ফজর আলীকে প্রধান আসামি করা হয়। এরপর পুলিশের একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে চিকিৎসা শেষে আদালতে হাজির করা হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- পাঁচকিত্তা গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।
বিচার হবে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দিয়ে: আইন উপদেষ্টা
মাগুরার ধর্ষণকাণ্ডের মতো কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনার বিচারও ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ে’ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। রোববার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে তিনি এমন প্রতিশ্রুতি দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, মুরাদনগরে যে জঘন্য ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা সবাই মর্মাহত; ক্ষুব্ধ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা ছবিগুলো ছড়িয়ে দিয়েছে, অত্যন্ত দায়িত্বহীন কাজ করেছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ধর্ষণসংক্রান্ত আইন সংস্কার করেছি। মাগুরার ঘটনায় দ্রুততম সময়ে বিচার দেখেছেন। এই ঘটনাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচার হবে।
# ভিডিও সামাজিক মাধ্যম থেকে সরাতে নির্দেশ আদালতের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসিকে এ নির্দেশনা পালন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ওই নারীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে। রোববার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনজীবী মীর এ কে এম নুরুন্নবীর করা রিটে এ আদেশ দেয়া হয়। আদেশের বিষয় নিশ্চিত করে তিনি জানান, আগামী ১৪ জুলাই রিটটি আদেশের জন্য তালিকায় থাকবে। ওই দিনের মধ্যে মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানাতে হবে।