সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরা তালা “কৃষ্ণকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়” নিয়োগ বোর্ড বসার আগেই দায়িত্বশীলদের ম্যানেজ করে অর্ধ কোটি টাকা বাণিজ্যে চার পদের বিপরীতে প্রার্থী চূড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
আবেদনকারী প্রার্থী ও স্থানীয়রা অভিযোগ তুলে বলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়োগ বোর্ড বসার আগেই প্রার্থী মনোনীত করে তাদের কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
জানা গেছে, অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে নিয়োগের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে তালা উপজেলা সহকারী কমিশার (ভূমি) নিয়োগ স্থগিত করেন। এতে বিপাকে পড়েন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার শীল। এমতাবস্থায় তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল হুদাসহ নিয়োগ কমিটির সদস্য, ডিজি প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক প্রতিনিধিসহ অন্যান্যদের বিশেষ সুবিধায় ম্যানেজ করে গত ১০ মে নিয়োগ সম্পন্ন করেন। অভিযোগ উঠেছে নিয়োগের জন্য অর্থগ্রহণকারী প্রার্থীদেরকে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় চার পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পদের মধ্যে আছে সহকারী প্রধান শিক্ষক, নৈশপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নিরাপত্তা কর্মী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলমগীর সরদারকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে ১৫ লাখ টাকা, কৃষ্ণকাটি গ্রামের ইমরান মোড়লকে নৈশপ্রহরী পদে, আসাবুর মোড়লকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে এবং জালালপুর ইউনিয়নের জেটুয়া গ্রামের লিটু গাজীকে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ দিতে ১২ লাখ টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার শীল ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল হুদা খোকন। আর এসব অপকর্মে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। তালা বি,দে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মনোনয়নপ্রাপ্ত ডিজি প্রতিনিধি, তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফিরোজ আহমেদ, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য আরাফাত হোসেন মুঠোফোনে বক্তব্য গ্রহণকালে তাদের বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয় কৃষ্ণকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার শীল ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল হুদা খোকন মুঠো ফোনে আলাপকালে ৫১ লাখ টাকার বিনিময়ে চার পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয় জানার জন্য ডিজি প্রতিনিধি তালা বি,দে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার হালদারে মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। টাকার বিনিময়ে নিয়োগের বিষয়ে তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফিরোজ আহমেদ কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কৃষ্ণকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্য আরাফাত হোসেন মুঠোফোনে জানান, আমাকে কেউ ম্যানেজ করেনি। পত্রিকায় ইতিমধ্যে যে সব প্রার্থীদের নাম প্রকাশ হয়েছে তাদের নেয়া হবেনা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পত্রিকায় যাদের নাম প্রকাশ হয়েছে তাদের যদি নিয়োগ হয় তা হলে আপনাদের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হবে।
এ বিষয় সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার শাহজাহান কবিরের সাথে মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলেন তিনি ফোন রিসিভ করেননি।