খাজুরা সংবাদদাতা
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে ছুরিকাঘাতে আহত কৃষক রিয়াজুল হোসেন (৩৫) হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের ২০ দিন পার হলেও প্রধান আসামি সুমন হোসেনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে আসামিপক্ষ।
গত ২ মার্চ দিনগত রাতে কৃষ্ণনগর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। এদিন রাতেই ছুরিকাঘাত ওই কৃষকের চাচা বায়েজিদ হোসেন তিনজনের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
মামলার প্রধান আসামি হলেন, কৃষ্ণনগর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার সুমন হোসেন (২৮)। অন্যরা হলেন, সুমনের ছোটভাই বিপ্লব হোসেন (২৬) ও তাদের বাবা মোস্তফা মন্ডল (৫৫)। তারা দু’জন আদালত থেকে জামিনে এসেছেন। ছুরিকাহত কৃষক রিয়াজুল হোসেন (৩৫) একই গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ রাত সাড়ে ৮টায় ক্যারামবোর্ড খেলাকে কেন্দ্র করে বাদীর বড়ভাই মিলনের সাথে আসামি সুমনের হাতাহাতি হয়। ঘটনার ১৫ মিনিট পর বাদীর ভাইপো রিয়াজুল বাড়ির পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে এসে তাকে ঘিরে ফেলে মারপিট শুরু করেন আসামিরা। একপর্যায়ে সুমন ছুরিকাঘাত করেন রিয়াজুলের পেটে। এ সময় তিনি ডাক চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে তাকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রিয়াজুলকে প্রথমে খুলনায় এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
আহত রিয়াজুলের বৃদ্ধা মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমার তিন ছেলের মধ্যে রিয়াজুল একদম সহজ-সরল। পরের জমিতে কাজ করে কোনোরকমে তার সংসারটা চলে। ওরা ছেলেটার পেটে ছুরি মেরেছে। পাকস্থলীতে দুটো ছিদ্র হয়েছে। মুখ দিয়ে খেতে পারছে না। আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমার রিয়াজুলের কিছু হলে কাউকে ছাড়বো না।’
মামলার বাদী ও রিয়াজুলের চাচা বায়েজিদ হোসেন জানান, প্রধান আসামি সুমন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং তার বাবা ও ছোটভাই জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে আতঙ্কে দিন পার করছেন রিয়াজুলের পরিবার। শুধু তাই নয়; উল্টো বাদীর স্বজনের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছে আসামিপক্ষ।
এদিকে, অভিযুক্ত প্রধান আসামি সুমন হোসেনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রায়পুর পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান বলেন, ‘প্রধান আসামি সুমন এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অন্য দুই আসামি জামিনে আছে।’
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, রায়পুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জকে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, ছাড় দেওয়া হবেনা।