বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের কেশবপুরে কপোতাক্ষ নদ ঘিরে পাউবোর সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের সীমানাপ্রাচীরের কারণে ব্যক্তিমালিকানাধীন কৃষিজমি, ফলের বাগান ও খামারে ঢুকতে পারছিলেন না এলাকাবাসী। তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) প্রশাসনের কাছে গেট তৈরির দাবি তুলেছিলেন। সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দুটি গেট তৈরির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন পাউবো কর্মকর্তারা। তবে গেট তৈরির জন্য খরচের টাকা এলাকাবাসীকে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছে পাউবো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাউবোর যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী ও কেশবপুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার আজ সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্য সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ৬ ফুটের দুটি গেট তৈরি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এ জন্য গেট দুটির স্থান নির্ধারণ ও খরচের টাকা এলাকাবাসীকে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দেন। কিন্তু এলাকাবাসী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় জমির মালিকদের মধ্যে রাজ্জাক আহম্মেদ, সৈকত হোসেন, আকবর আলী মোড়লসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানান, এত বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করে গেট নির্মাণ করা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ বিষয়ে পাউবোর কর্মকর্তাদের কাছে অপারগতার কথা জানালে কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কিছুই করার নেই বলে জানিয়েছেন।
জমির মালিক আবু সাঈদ বলেন, ‘ওখানে আমার আট কাঠা জমি আছে। সেখানে হলুদসহ ছোট ফসল ফলাই। আমার পক্ষে গেট নির্মাণে অর্থ দেয়া অসম্ভব।’ দিদার নামের আরেকজন বলেন, তার চার কাঠা জমির ওপর একটি ছাগলের খামার আছে। তার পক্ষেও গেট তৈরির অর্থ দেয়া কষ্টকর।
এলাকাবাসী বলছেন, প্রকল্পে সীমানাপ্রাচীর করার সময় সাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা না রেখে নকশা করা পাউবোর ভুল ছিল। পাউবোকেই ওই গেট তৈরি করে দিতে হবে।
পাউবোর যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কারণে মানুষের কোনো অসুবিধা হোক, সেটা তারা চান না। এ জন্য এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য দুটি গেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এলাকাবাসী টাকা দিয়ে গেট বানানো কষ্টকর জানালে তিনি বলেন, প্রকল্পে গেট তৈরির কোনো আলাদা অর্থ নেই। নকশা তৈরির সময় কোনো ভুল ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।
ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করতে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পাউবো। তীরজুড়ে সীমানাপ্রাচীর তারই অংশ। কিন্তু সেটি তৈরির ফলে নদীতীরের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদ প্রকাশের জেরেই সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তারা।