# বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামকে ধরে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রজনতা। বুধবার বিকেলে পৌর শহরের ভবানীপুর এলাকায় একটি বাড়িতে ঘেরাও করে রাখে ছাত্রজনতা। পরে ছাত্রজনতার ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে খালের পানিতে ঝাঁপ দেন। পরে স্থানীয় জনতা তাকে ধরে মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে একটি বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রফিকুল ইসলাম তার বাড়ি ভবানীপুর মোড়লপাড়া এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। বুধবার দুপুরের দিকে তার বাড়িটি স্থানীয় ছাত্র-জনতা ঘিরে রাখে। বিষয়টি বুঝতে পেরে রফিকুল ইসলাম ওই এলাকার আরিফুর রহমান মিলনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে ছাত্রজনতার ভয়ে পালাতে একটি খালের পানিতে ঝাঁপ দেন রফিকুল। পুলিশ জানতে পেরে রফিকুলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষুদ্ধ পুলিশের হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় স্থানীয় জনতা তাকে বেধড়ক মারপিট করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত থানায় নিয়ে যায়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ জড়ো হয়ে রফিকুলকে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর রফিকুল এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার রাতে আবারো বাড়িতে ফিরে আসেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের সাধারণ এক কর্মী থেকে রাজনীতিতে তার হঠাৎ উত্থান হয়। ২০১৫ সালে তিনি প্রথবার নৌকা প্রতীকে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আব্দুস সামাদ বিশ্বাসকে পরাজিত করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন। এছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পান। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রফিকুল ইসলাম মোড়লকে। রাজনীতিতে তার এরকম উত্থানের কারণে বেপরোয়া ওঠেন। ওই সময় তার ভাগ্নে টিটোর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘উপজেলা নিয়োগ ও টিআর, কাবিখা সিন্ডিকেট’। ওই সিন্ডিকেটটি কয়েকশত কোটি টাকা লেনদেন করেছে। তার প্রতিবেশীরা জানান, এক সময়ের নুন আনতে পান্তা ফুরানো রফিকুল ইসলাম মোড়ল হঠাৎ করেই আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান। এরপর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও গড়ে তোলেন নিজস্ব বলয়। দলীয় রাজনীতিতে তার মতের বাইরে কেউ গেলে তাদের শায়েস্তা করতে সন্ত্রাসী বাহিনী ও টর্চার সেল গঠন করেন। তার ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দিতো জামাল। যেটি উপজেলাব্যাপি জামাল বাহিনী নামে পরিচিত। ওই বাহিনীর উপজেলা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব ছিল।
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্রজনতা তাকে সাবেক মেয়রকে ঘিরে রাখে। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে কেশবপুরে ত্রাস সৃষ্টি করতেন জামাল বাহিনী। সেই জামাল বাহিনীর পরিচালনা করতেন সাবেক মেয়র রফিকুল।