মনিরুজ্জামান মনির
দুইদিন পরেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সরগরম হয়েছে যশোরের মসলার বাজার। শহরের বড় বাজারে মুদি দোকানীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল ১০ হতে রাত ১২ টা পর্যন্ত জমজমাট মসলা বেচাকেনা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনা এবার মসলা বাজারে ভিড় তুলনামূলক বেশি। তবে বিক্রেতাদের দাবি বিক্রি কম হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যশোরের বড়বাজারে মুদি ব্যবসায়ীরা মসলা বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মসলার বাজার জমে উঠেছে। জিরা ৬০০ থেকে ৬৫০, দারুচিনি ৫২০ থেকে ৪২০ টাকা, এলাচ ৪ হাজার ৩শ’ থেকে ৪ হাজার ৯শ’ টাকা, লবঙ্গ এক হাজার ২শ’ থেকে এক হাজার ৩৫০, হলুদ ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, তেজপাতা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা ও আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে কেজি হচ্ছে।
বড়বাজার হাটখোলা রোডে মেসার্স মা লক্ষ্মী ভান্ডারের মালিক বীরবল কুমার পাল জানান, আমরা সাধারণত জিরা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, হলুদ, তেজপাতা, আদাসহ হরেক রকমের মসলা বিক্রি করি। এ বছরে কোরবানি উপলক্ষ্যে মসলা জাতীয় পণ্য বিক্রি হলেও সেটা পরিমাণে কম। এছাড়া অন্যান্য সময়ের চেয়ে পেয়াজ রসুনও বেশি বিক্রি হচ্ছে।
নিউ রাধাগোবিন্দ ভান্ডারের গঙ্গাদেব পাল জানান, তিনি কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বেশি করে মসলা আমদানি করেছেন। আজ দু’দিন ধরে বেচাকিনা শুরু হয়েছে। আশা করি চাঁদরাত পর্যন্ত বিক্রি হবে।
বড়বাজারে চুইঝাল বিক্রেতা অপূর্ব জানান, কোরবানিকে সামনে করে চুই ঝালের চাহিদা বাড়ছে। দামও একটু বেশি হয়েছে। কারণ পাইকারিও দাম বাড়ছে। এ ঈদে সবাই তো গোশতো রান্না করে। গোশে অন্য সময় চুই ঝাল ব্যবহার না করলেও অনেকে ঈদের সময় ব্যবহার করে। চুই ঝাল গোশতে ভাল স্বাদ আনে।
সুজিত পাল স্টোরের সুজিত জানান, কোরবানি ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকে। কারণ সবার বাড়িতে গোশত রান্না হয়। এজন্য মসলা বেশি প্রয়োজন হয়। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ছোট দোকানদাররা তাদের কাছ থেকে পাইকারি হারে মসলা ক্রয় করছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বেচাকেনা শুরু হচ্ছে মধ্যরাতে শেষ হয়। ঈদের দিন রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে। আশা করছি গতবারের চেয়ে এবার বেশি মালামাল বিক্রি হবে।
যশোর মোল্লাপাড়ার শাহিনুর খাতুন জানান, যশোর বড় বাজারে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে জিরা-মসলা কেনা কাটা করতে আসছি। এ ঈদে গরু কোরবানি করা হচ্ছে। এক হাজার ৫৮০ টাকার মসলা কিনছি। কোরবানির ঈদে গোশত’র পরিমাণ বেশি হওয়ায় প্রতি বছর বড়বাজার থেকেই পাইকারি দামে মসলা কেনা হয়।
সাতমাইল এলাকার ফেরদাউস হাসান জানান, মুসলমানদের বছরে বড় দু’টি ধর্মীয় উৎসব হয়। একটি রোজার আনন্দ এবং আর একটি হচ্ছে কোরবানির আনন্দ। এ ঈদে ধনি গরিব সবাই গোশত খেতে পারে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গরু কোরবানির ভাগি হয়েছি। তাই বড়বাজারে হরেক রকমের মসলা কিনতে আসছি।