বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আড়াই মাস পর যশোরের মণিরামপুরে মজিদ দফাদার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের লাশ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে তোলা হয়েছে। রোববার দুপুরে লাশ তোলার কাজ শুরু হয়।
বিকেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় মণিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। মৃত মজিদ দফাদার উপজেলার নেহালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এই মামলায় মৃত মজিদ দফাদারের ছেলে সোহরাব দফাদার কারাগারে রয়েছেন। সোহরাব নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নাম্বার ওর্য়াডের ইউপি সদস্য।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মজিদ দফাদারের সাথে ছেলে ইউপি সদস্য সোহরাব দফাদারের বিরোধ ছিলো।
জমির শরিক ফাঁকি দিয়ে নিজের নামে জমি লিখে নিতে পিতা মজিদকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতেন।
এতে রাজি না হওয়ায় চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পিতাকে মারপিট করে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে ছেলে সোহরাব। একপর্যায় পিতার মৃত্যু হলে তড়িঘড়ি করে পরদিন সকালে দাফন শেষ করে ছেলে সোহরাব।
দাফনের সময়ে মজিদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় নিকট স্বজন ও স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
তারপরও সোহরাবের জোরাজুরিতে দাফন শেষ করেন স্থানীয়রা।
পরে মজিদের মেয়ে ও জামাই সাত্তার মোল্যা গত ২৯ সেপ্টেম্বর হত্যার অভিযোগে এনে আদালতে মামলা করেন।
এতে আসামি করা হয় ইউপি সদস্য সোহরাবকে।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে রোববার লাশ উত্তোলন করা হয়।
লাশ উত্তোলনের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় লাশ উত্তোলনের খবর শুনে কবরস্থানে ভিড় জমে স্থানীয়দের।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিকট স্বজনেরাও।
মণিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ মজিদ দফাদারের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় কবর থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়েছে। লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সেখানে তদন্তের রিপোর্ট করবেন সংশ্লিষ্টরা।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, ‘গত ৫ নভেম্বর ইউপি সদস্য সোহরাবকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’

