বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঈদের দিন ফুফু বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় সোহানা আক্তার নামে দশ বছর বয়সী এক শিশু। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ পুকুরের পানিতে ফেলা দেয় অভিযুক্ত ফুফাতো ভাই নাজমুস সাকিব নয়ন (১৯)। তারা প্রচার করে সোহানা নিখোঁজ হয়েছে। পরের দিন পুকুর থেকে সোহানার মরদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে হত্যার রহস্য।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত নাজমুস সাকিব নয়ন ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছে। অভিযুক্ত নাজমুস সাকিব নয়ন (১৯) মণিরামপুরের মাছনা কাওমী মাদরাসার ছাত্র ও ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের ইলিয়াস রহমানের ছেলে। নিহত সোহানা আক্তার ঝিকরগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে ও বায়সা-চাঁদপুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। শুক্রবার বিকেলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত নাজমুস সাকিব নয়ন জানান, ৭ জুন ঈদের দিন ঝিকরগাছার হাড়িয়া গ্রামে ছোট ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায় সোহানা। এদিন দুপুরে সোহানার ফুফাতো ভাই নাজমুস সাকিব নয়ন মামাতো ভাইকে মামা বাড়ি দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এসে দেখে নয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া বোন তন্বী ঘুমিয়ে আছে। আর সোহানা উঠানে দোলনায় খেলছিল। এই সময় পরিবারের আর কোন সদস্য বাড়িতে ছিল না। এ সুযোগে সে সোহানাকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে সে সোহানার গলা ও মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সোহানা শ্বাসরোধে মারা যায়। এরপর নয়ন মরদেহটিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে।
এদিকে, নিজের অপরাধ ঢাকতে নয়ন তার বোন তন্বীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে মিথ্যা গল্প সাজাতে থাকে- সোহানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে তারা দু’জন মিলেই সোহানার বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানায়। বিকেলে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
সোহানার বাবা আব্দুল জলিল ঝিকরগাছা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ের ঠোঁটে জখমের চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখেছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতেই পুলিশ ঘটনাটির গভীর তদন্তে নামে। গত মঙ্গলবার (১১জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ নয়নকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। আটককৃত নাজমুস সাকিব ওরফে নয়নকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।