তালা সংবাদদাতা
টানা বৃষ্টিতে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৭ গ্রামের মধ্যে সবয়টি গ্রাম তলিয়ে গেছে, এতে পানিবন্দি হয়েছে ৩ হাজার পরিবার,খাদ্য সংকটে প্রাণীকূল। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।
শনিবার সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রামের মধ্যে সব কয়টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ হাজার পরিবার। সকল কৃষকদের ফসল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
টানা বর্ষণে এছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরের পানি এসে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিরাশুনী, লাউতাড়া, পাঁচরোখি, সুভাশুনী, মদনপুর, সুমুজদিপুর গ্রাম। এছাড়া অন্যান্য গ্রামগুলোতে উঠানে পানি উঠেছে। সকল এলাকার ধান ও সবজি পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেচে কাঁচা ঘর। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলা সদরের সাথে। কিছু কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানিবন্দি এলাকায় ঘরবাড়ির, বিদ্যুৎ মিটার ছিঁড়ে পড়েছে। এতেত করে দুর্ভোগে আছে স্থানীয়রা।
ধারাবাহিক বৃষ্টিতে বেসরকারি হিসাবে প্রায় ১ হাজার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৩-৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘের মালিকরা। ইউনিয়ন জুড়ে প্রায় শতাধিক পোল্ট্রি খামার পানিতে তলিয়ে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারি শিরিনা বেগমসহ একাধিক খামারী।

পানিবন্দি হয়েছে, তেরছি, কলাপোতা, হাতবাস, শিরাশুনী লাউতাড়া পাঁচরোখি এলাকার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়। পানিবন্দি হয়েছে শিরাশুনী সৈয়দ দিদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় সহ ৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মাদ্রাসার মধ্যে ধলবাড়িয়া, শিরাশুনী, দেওয়ানীপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় বারান্দায় পানি উঠেছে। বন্যায় পানিবন্দি হয়েছে শুভাশুনি ডিগ্রি কলেজ।
পানিবন্দিরা জানান, আমরা ত্রাণ চাই না, আমরা চাই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধান। টানা বৃষ্টিতে এমন পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন এই এলাকার পানি নিস্কাশনের জন্য সাধারণত যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ভদ্রা নদী দিয়ে পানি বের হতো। বর্তমানে ওই এলাকার নননিয়া স্লুইস গেট দিয়ে পানি সরতে পারছে না পলি মাটিতে উঁচু হয়ে গেছে খাল ও নদীর তলদেশ। বর্তমানে নননিয়া খালের সুইস গেট এর উপর চার পাঁচ ফুট পানি। এখানকার পানি সরবরাহের জন্য পলিমাটি অপসারণ না করলে যৌক্তিক সমাধান হবে না। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বেসরকারি কয়েকটি সংগঠনের সাথে এ বিষয় সমাধানের জন্য আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. রাসেল জানান, তিনি তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করবেন। যদি কোথাও পানি সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা থাকে সেগুলো অপসারণ করবেন। তিনি আরো বলেন পার্শ্ববর্তী জেলা যশোর থেকে আমাদের উপজেলায় পানি আসার কারণে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।