সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
৬০ বছর আগে পিতার বিক্রি করা জমি তার মৃত্যুর পর দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ছেলে জোহর আলী সরদার। জমি ক্রয়কারীদের উচ্ছেদ করতে প্রভাবশালী এক ইউপি মেম্বরের সেল্টারে বিভিন্ন রকম প্রপাকান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে জোহর আলীসহ তার সহযোগীরা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের।
উপজেলার ইসলামকাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের মোজহার আলী সরদার ও মেয়ে ফুকদি বিবি’র কাছ থেকে ১৯৬৬ সালে ইসলামকাটি মৌজার ১৭৬ খতিয়ান ও ৮৪১ খতিয়ানে দু’টি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে মোট ৯টি দাগে সাড়ে ৯৫ শতক জমি কেনেন একই গ্রামের শাহজাহান আলী খাঁন। শাহজাহান আলী খাঁনের মৃত্যুর পর পৈত্রিক সূত্রে তিন ছেলে সিরাজুল ইসলাম খাঁন, রিজাউল করিম খাঁন, আজাহারুল ইসলাম খাঁন ও একমাত্র মেয়ে তহমিনা খাতুন এবং স্ত্রী আইজান বিবি জমির মালিকানা পান। সস্প্রতি সিরাজুল ইসলামের ভাতিজা বাদশা খাঁন তার পিতার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ভোগদখলীয় ওই জমিতে সেবা এগ্রো লি. নামে একটি সবজির হ্যাচারির জন্য বাঁশ-খুটি দিয়ে মাচা তৈরি করেন। আর তখনি বিপত্তি ঘটে। হঠাৎ দীর্ঘ ৬০ বছর পর ওই জমির মালিক দাবি করেন মৃত মোজহার আলী সরদারের ছেলে জোহর আলী সরদার। এবং আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা ঠুকে দেন। এ ঘটনায় গত ১৩ মার্চ ওই জমিতে প্রবেশ না করার জন্য আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তালা থানা পুলিশ সিরাজুল ইসলাম গং ও তার ভাতিজাদের নোটিশ করেন।
এ ব্যাপারে সিরাজুল ইসলাম খাঁন জানান, আমার পিতা ১৯৬৬ সালে প্রতিপক্ষ জোহর আলী সরদারের পিতা ও তার ফুফুর কাছ থেকে রেজিষ্ট্রি দলিলমূলে সাড়ে ৯৫ শতক জমি কেনন। সেই থেকে আমরা ভোগ দখলে আছি। কিন্তু এখন জানতে পারি আমার পিতার ক্রয়কৃত ওই সম্পত্তির দলিল গোপন করে তার মৃত পিতার নামে পূর্বের এস এ রের্কড দেখিয়ে সে ও তার বোনদের নামে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস থেকে কৌশলে একটি নামজারি রেকর্ড বের করে জমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করেছে। ওই ভুয়া নামজারির বিরুদ্ধে আমরা ১৫০ ধারায় একটি মামলা করেছি। যেটি চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বর আসাদের সেল্টারে জমি দখল নিতে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে ১৪৫ ধারার মামলা করে হয়রানি করছে। এমনকি জমি দখল নিতে বিভিন্ন ধরনে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমাদের পরিবারটি এখন জীবনের নিরাপত্তহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ মোল্যা জানান, আমার বাড়ীর সামনের জমিটি দেখামতে দীর্ঘ ৩০/৪০ বছর ধরে সিরাজুল ইসলাম খাঁন ও তার পরিবারের লোকজন ভোগদখল করে আসছেন। জানামতে সিরাজুল ইসলাম খাঁনের পিতা জোহর আলী সরদারের পিতা ও ফুফুর কাছ থেকে কেনেন। তাদের নামে দলিলও রয়েছে।
জোহর আলী সরদারের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, বিষয়টি আমি হ্যান্ডেলিং করছি। আমার বয়স ৪৭ বছর। আর ১৫ বছর ধরে মেম্বারি করছি। জমির দখলে থাকা সিরাজুল ইসলাম খানদের ১৯৬৬ সালের একটি দলিল রয়েছে সেটি মূলত জাল দলিল। জোহর আলী সরদারের মোবাইলে কথা বলার জন্য নাম্বার চাইলে মেম্বর বলেন তার মোবাইল নাম্বার দেয়া নিষেধ। তবে আমি আপনার সাথে পরে তার যোগাযোগ ও দেখা করিয়ে দেব।