বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ত্রিভূজ প্রেমের সম্পর্কের বিরোধের জেরে জহিরুলকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সাথে হত্যায় ব্যবহৃত কুড়াল ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মণিরামপুর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের সফিকুল ইসলাম, একই গ্রামের মামুন হোসেন ও জলিল মোড়লের স্ত্রী মর্জিনা বেগম। শনিবার বিকেলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর সকাল ৬ টার দিকে মণিরামপুর নেহালপুরগামী বাটবিলা পাকা রাস্তা বিলের পাশে উদ্ধার হয় গোবিন্দপুরের খোরশেদ সানার ছেলে কোনাকোলা বাজারের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলামের (৫২) মরদেহ। ওই দিনই মরদেহ উদ্ধার করে মণিরামপুর থানা পুলিশ। কে বা কারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় ও গলায় আঘাত করে জহিরুলকে হত্যা করে। এ ঘটনায় ওই দিনই অজ্ঞাত আসামি করে নিহতের স্ত্রী সাইফুর নাহার মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। হত্যকাণ্ড ঘাটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা শাখা ও থানা পুলিশ যৌথভাবে তদন্তে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করে দুদিনের মধ্যে। এরপর ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে মণিরাপুরের শ্যামনগর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি। এ সময় ঘটনায় জড়িত ২ সদস্যকে গ্রেফতার ও হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো কুড়াল, মোটরসাইকেল ও আসামিদের ব্যবহৃত ২টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সফিকুল জানিয়েছে, মণিরামপুরের কোনাকোলা বাজারে জহিরুল ইসলামের টিউবওয়েলের ব্যবসা আছে। তিনি শ্যামনগর গ্রামের জলিল মোড়লের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এর আগে মর্জিনা বেগম দীর্ঘদিন ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলামের সাথে পরকীয়া করে আসছিলেন। জহিরুলের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি সম্প্রতি শফিকুল জানতে পারলে মর্জিনা বেগমের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা ও দূরত্ব তৈরি হয়। এ নিয়ে মর্জিনা সফিকুলকে গালমন্দও করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সফিকুল ইসলাম অপমানের প্রতিশোধ নিতে জহিরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আর ঘটনার দিন সহযোগি মামুনকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকেন। ১০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোনাকোলা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে জহিরুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এ সময় ধারালো কুড়ালের আঘাতে হত্যা করে মরদেহ ও মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে ফেলে রাখে শফিকুল। পরের দিন সকালে লাশ উদ্ধার হয়।