মধুখালী সংবাদদাতা
সম্প্রতি মন্দিরে আগুন দেয়ার অভিযোগে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে ফরিদপুরের মধুখালীতে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার সকাল থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও ডুমাইন এলাকায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামনুন আহমেদ জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা টহলে রয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর নিকটে এবং বাঘাটে বাজার এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে।
পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এর আগে উক্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল রাতে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে একটি কালিমন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে।
এতে মন্দির সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট নির্মাণকাজের নির্মাণ শ্রমিকদের সন্দেহ করে মারধর শুরু করে কয়েক তরুণ। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসীকে জানানো হয়, তারা মন্দিরে আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় সহোদর দুই ভাই আরশাদুল ও আশরাফুলের নিহত হন। তবে পুলিশ জানিয়েছেন, মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে কয়েক হাজার মানুষ। একপর্যায়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিকে রূপ নেয়, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় প্রশাসন। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে দীর্ঘ সাত ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলি ও টিয়ারশেলে কমপক্ষে ১৫ জন বিক্ষোভকারী আহত হন।