বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পার্থেনিয়াম শুধু পরিবেশের ক্ষতি করে না। মানুষ ও পশুর মৃত্যুর কারণও। এর বিস্তারে ফসলের উৎপাদনও ৪০ শতাংশ কমে যায়। বিষাক্ত পার্থেনিয়াম নিধন ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা ১১টায় জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে এ বৈঠকটির আয়োজন করে ইয়াহান সামাজিক সংঘ।
বক্তারা বলেন, পার্থেনিয়ামের বীজ ১০ বছর পর্যন্ত মাটিতে জীবিত থাকতে পারে। এটি দ্রুত ও সহজে বিস্তার লাভ করায় এর ক্ষতির দিক তুলনামূলক বেশি।
আগাছাটি অত্যন্ত ভয়ংকর। গবাদিপশু চরানোর সময় এর গায়ে লাগলে পশুর শরীর ফুলে যায়। এছাড়াও তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। যকৃত পঁচে যায়। বিশেষ করে গাভী পার্থেনিয়াম খেলে দুধ তিতা হয়। ওই দুধ অনবরত কেউ খেলে সেই মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
পার্থেনিয়াম গাছ খেলে গবাদি পশু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর এই ভাইরাস আক্রান্ত পশু জবাই করে এর মাংস খেলে মানুষের শরীরও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। যার ফলে মানব শরীরে দেখা দেয় এজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসে ক্যানসার সহ বিভিন্ন রোগ। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
পার্থেনিয়াম আগাছা হাত দ্বারা স্পর্শ করলে বা চটকালে ছোট থেকে পরবর্তীতে বড় ধরনের রোগ দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় হাত-পা চুলকায়, লাল হয়ে যায় এবং বৃহৎ আকারে ত্বকে ক্যানসারের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং অসহ্য মাথা ব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপে ভোগে।
বৈঠকে পার্থেনিয়ামের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন, জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুল হক, যশোর সরকারি এমএম কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জিল্লুল বারী, যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জেষ্ঠ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান, যশোর আঞ্চলিক প্রাণিসম্পদ গবেষণা কেন্দ্রের জেষ্ঠ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হারিছ আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইয়াহান সামাজিক সংঘের সদস্য সচিব মো. রায়হান সিদ্দিক। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইয়াহান রক্তদান সংস্থার আহ্বায়ক কাজী নূর, ইয়াহান কবর খনন সংস্থার সদস্য সচিব আব্দুল আজিম, সদস্য সেলিম রেজা পল্লব, ইমরান হোসেন রাজ প্রমুখ।