বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের শার্শা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল লুটের অভিযোগে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রুহুল কুদ্দুসের প্রাথমিক সদস্যসহ সব প্রকার পদ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার রাতে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন রুহুল কুদ্দুস। সংবাদ সম্মেলনে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার দাবি, চাল লুটের ঘটনায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তদন্ত ছাড়াই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, বুধবার সকালে শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতার ১৫৫ বস্তা চাল বাগআঁচড়া খাদ্য গুদাম থেকে লোড করে কয়েকটি ট্রলিতে করে পাঠানো হচ্ছিল ডিলার শাহাজাহান কবিরের দোকানে। পথিমধ্যে বাগআঁচড়া বকুলতলা পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা শার্শা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রহুল কুদ্দুসের ভাই ইবাদুল ইসলাম কালু ও তার লোকজন ট্রলি দাঁড় করিয়ে চালককে জিম্মি করে ১৫৫ বস্তা চাল নিজের গোডাউনে নামিয়ে নেন। বিষয়টি প্রশাসন ও দলীয় নেতাদের কাছে খবর যাওয়ার পর দুপুরের দিকে চালের ট্রলি ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দোলোয়ার হোসেন খোকন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শার্শা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রুহুল কুদ্দুসের প্রাথমিক সদস্যসহ সব প্রকার পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন শার্শা উপজেলা বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঘটনাস্থল বাগআঁচড়া বকুলতলা মোড়ে ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। চাল লুটের বিষয়টি সঠিক নয়। ওই ঘটনার পরপরাই কায়বা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের ডিলার শাহাজান কবির আমার কাছে মোবাইলে কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। তাৎক্ষনিকভাবে আমার ভাই ইবাদুল ইসলামকে কল করে ডিলার শাহজাহান কবিরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাই। সে দাবি করে শাহজাহান কবিরের কাছে তার নগদ টাকা পাওনা রয়েছে। এজন্য চাল আটকে রেখেছে। সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল জানতে পেরে ট্রলিগুলো আমার ভাই ছেড়ে দেয়। ঘটনাটি নিছক আমার ভাই ও ডিলার শাহাজান কবিরের ব্যক্তিগত বিষয়। যা আমি মোটেও জ্ঞাত ছিলাম না।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ধংস ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করেছে। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কুদ্দুস বলেন, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিলার শাহাজান কবির, ডিলারের প্রতিনিধি তৌহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম প্রমুখ। এই বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু বলেন, প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে চাল লুটের অভিযোগ আসে। প্রাথমিকভাবে তার পদ স্থগিত রাখা হয়েছে। একই সাথে তাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে তাকে বহিস্কার করা হবে। আর তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হলে তার স্থগিতদাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।