বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অজ্ঞাত ৩ পুরুষ রোগী নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে কতৃপক্ষ। পরিচয় ও স্বজনবিহীন এসব রোগী হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ১২ নং পুরুষ মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ২ জন রোগী অচেতন অবস্থায় রয়েছে। অপরজন কথা বলতে পারলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে অসুস্থ এ ব্যক্তিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন পথচারিরা। বিভিন্ন ঝামেলার ভয়ে তারা জরুরি বিভাগে রোগী সম্পর্কিত কোন তথ্য বা নিজের নাম ঠিকানা দিয়ে যাননি। বর্তমানে এ তিনজন রোগী হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ১২ নং পুরুষ মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন।
এদের মধ্যে দুইজন বৃদ্ধ (৭০) এবং অপরজন আনুমানিক বছর পঁচিশের যুবক। একটি সূত্রে জানা গেছে যুবকটিকে যশোর শহরের ঈদগাহ মোড়ে ফুটপাতের উপর থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান একজন ছাত্র। দুইজন বৃদ্ধের সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বৃদ্ধরা ময়লা-আবর্জনা জমে থাকা কাপড়ে শুয়ে আছেন হাসপাতালের ফ্লোরে। হাতে ক্যানুলা লাগানো এবং নিয়মিত গোসল না হওয়ায় শরীরে ময়লা জমে রয়েছে। পাশে কেউ গেলে উঠে বসেন, আবার কখনো চুপচাপ থাকেন, কখনো রেগে ওঠেন। তবে বিভাগের দায়িত্বে থাকা নার্সরা তাদেরকে যত্নসহকারেই দেখছেন।
পুরুষ মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স পান্না আখতার জানান, এ তিনজন রোগীর স্বজনদের খোঁজ না পাওয়ায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। আমরা সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত ওষুধ, স্যালাইন দিচ্ছি। এছাড়া কিছু ওষুধ বাইরে থেকে কেনার প্রয়োজন হলে আমাদের ভিন্ন উৎস থেকে তা সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এ বৃদ্ধরা হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বিছানায় প্রস্রাব ও মলত্যাগ করেন, যা অন্য রোগীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। পরিবারের কেউ না থাকায় আমরা তাঁদের যত্ন নিচ্ছি।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন সাফায়াত জানান, “অজ্ঞাত তিন রোগির আমরা দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের নার্সরা সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন। একই সাথে আমরা তাদের স্বজনদেরও খোঁজ নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসব রোগীর ক্ষেত্রে আমরা হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসে আবেদন করে বাইরের ওষুধ সংগ্রহ করে থাকি। বর্তমানে অজ্ঞাত পরিচয়ের রোগি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি তাদের যথাযথ পরিচয় এবং স্বজনদের সন্ধানে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।