বাংলার ভোর প্রতিবেদক
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে যশোরে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। রবিবার সন্ধ্যা থেকে শহরের লালদীঘিতে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে শহরের লালদীঘিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নামে। যশোর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে শহরের ৪৯টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় এখানে। বিসর্জন উপলক্ষ্যে লালদীঘি এলাকাতে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকে। শত শত মানুষ প্রতিমা বিসর্জন দেখতে জড়ো হয় দীঘিতে।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনেক ভক্ত অশ্রুসিক্ত থাকেন। আবার অনেকেই ক্ষণটিকে সুন্দর করে কাটাতে সিঁদুর খেলা ও নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন।
বিসর্জন উপলক্ষে লালদীঘির আলী রেজা রাজু মঞ্চে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিমা বিসর্জনে মানুষের এই ঢলে প্রমাণ করে বাঙালি উৎসবকে ভালোবাসে।
অসাম্প্রদায়িক জেলা যশোর, সাংস্কৃতিক জেলা যশোরে ধর্ম বর্ণের পার্থক্য নাই। হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষেরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে যেমন সবাই কাধে কাধ রেখে কাজ করেছি; তেমননি দেশের যেকোন ক্রান্তিলগ্নে সবাই এক হয়ে কাজ করবো। শুধুমাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কোথাও কোন কারণে যেন বৈষম্যের সৃষ্টি না হয়। কেউ যেন সুযোগ সন্ধানি সুযোগের জায়গা যেন না পায়। সবাইকে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপাঙ্কর দাস রতনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, যশোর সেনানিবাসের লেফট্যানেন্ট কর্নেল মোস্তফা কামাল, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে বিকাল থেকে মন্দির মন্ডপে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে দুর্গা মাকে বিদায় জানান ভক্তরা। লাল দিঘি ছাড়াও জেলার বিভিন্ন নদী এবং পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। এবছর যশোর জেলায় ৬৫২টি মন্দির ও মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা ২০২৩ সালে ছিলো ৭৩২টি।