বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদ
নেই কোন সরকারের অনুমতি। নেই কোন ট্রাক্টর চালকের লাইসেন্স। নষ্ট করছে কোটি কোটি টাকার সড়ক। প্রশাসনের সামনেই চলছে নিষিদ্ধ যন্ত্র দানব ট্রাক্টর। সাধারণ জনগণ প্রশ্ন তুলেছেন কার স্বার্থে, কার ইশারায় শার্শা উপজেলার অলিতে গলিতে চলছে এই নিষিদ্ধ ট্রাক্টর।
বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলার গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়কে নিষিদ্ধ ট্রাক্টরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। গ্রামীণ সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতির কবলে পড়েছে। এসব যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক গুলোতে অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ ট্রলি। গ্রামীণ পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা সড়কে মাটি, বালি, কাঠ-গাছ পরিবহনকারী অবৈধ ট্রাক্টরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলার মানুষ। সরকারে পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত নতুন সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার করা হলেও এ যন্ত্রদানবের ভয়াল ছোবলে সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দিনে-রাতে সমানতালে অবৈধ এই ট্রাক্টর চললেও এ সব বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন কার ইশারায় চলছে এসব অবৈধ দানব।
মূলত ট্রাক্টরটির তৈরি করা কৃষি কাজের জন্যে। আর এটিকেই কৃষি কাজে ব্যবহার না করে ইঞ্জিনের পেছনে বড় স্টিল বা কাঠ বডির ট্রলি লাগিয়ে এটির নাম দেয়া হয়েছে ট্রাক্টর। এই ট্রলির নিচে বিশাল সাইজের চারটি চাকা রয়েছে। অতিরিক্ত পণ্যবাহী বিশালাকার চাকার এ দানবের চলাচলে ধ্বংস হচ্ছে সড়ক। এই ট্রাক্টর দিয়ে বেশিরভাগ বহন করা হয় ব্রিক ফিল্ডের ইট। এছাড়া রড, সিমেন্ট বালুসহ নির্মাণ সামগ্রি এবং সেই সাথে বড় বড় গাছের লগ।
এসব ট্রাক্টরের অধিকাংশের চালক কিমোর এবং অনভিজ্ঞ, ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন এবং মাদকাসক্ত। এরা দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া ১৪ থেকে ১৮ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। বৃদ্ধি পাচ্ছে হতাহতের ঘটনা। শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লার সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাসহ উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় প্রায় ৩ থেকে ৪ শতাধিক অবৈধ ট্রাক্টর টলির দৌরাত্ম্য চলছে। এ যন্ত্রদানবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ রোগী, শিশু, বয়োবৃদ্ধ শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণ।
স্থানীয় তরিকুল মিয়া জানান, এ ট্রাক্টর চলাচলের সময় আশপাশ এলাকায় কুয়াশার মতো ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। আর ধূলোর মধ্যে দিয়ে চলাচল করে সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। উপজেলার ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের শাখারীপোতা গ্রামের বাজার কমিটির সেক্রেটারি বাহার আলী সহ বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, হাল চাষের এই ট্রাক্টর হালচাষ বাদ দিয়ে কোন ক্ষমতা বলে পণ্য পরিবহন করছে তা আমাদের জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইনী ব্যবস্থা না নিয়ে অদৃশ্য কারণে চুপ থেকে এগুলো সড়কে চলাচলের জন্য সুযোগ করে দিচ্ছে।