বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের বাঘারপাড়ায় ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার চন্ডিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জমজমাট এই ফাইনাল হয়। এতে মাগুরা শালিখার ইস্মৃতি মম ফুটবল একাদশ কালিগঞ্জ একতা ফুটবল একাদশকে দুই শূণ্য গোলে পরাজিত করে। ফুটবলের ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে হাজারো ফুটবলপ্রেমীর ঢল নামে মাঠে। খেলাটি উপভোগ করতে মাঠে যেন আনন্দ আর উন্মাদনার মেলা বসেছিল। দুই দলের খেলোয়াড়রা মাঠে নামলে দর্শকদের মাঝে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। মাঠ ছাড়িয়ে দর্শকের ঢলে কেউ কেউ অবস্থান নেন গাছে কিংবা বিভিন্ন ভবনের ছাদে। খেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই গোল আদায় করে নেওয়ার জন্য দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে চলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। দীর্ঘদিন পর গ্রামীণ পর্যায়ে এমন দর্শকপূর্ণ মাঠে খেলা দেখতে পেরে ফুটবলপ্রেমীরা ছিলেন বেশ আনন্দিত। মাহাবুর রহমান ৮ দলীয় এই ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল চিত্রা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রচণ্ড রোদে ছাতা ধরে খেলা দেখতে দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে তিনটায় খেলা শুরু হলেও ১২ টার আগে পুরো মাঠ ভরে যায়। খেলায় বাড়তি উন্মোদনা দেয় দুই দলেই বিদেশি খেলোয়াড়ের উপস্থিতি। চতুর্দিকে হাজারো দর্শকের উল্লাস আর করতালি। কোথাও নেই দাঁড়ানোর এতটুকু জায়গা। কেউ স্কুলের ছাদে, কেউ গাছের ডালে, আবার কেউবা উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখায় মত্ত। কিশোর কিংবা যুবক, বৃদ্ধ সবার দৃষ্টি খেলার দিকে। খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠের চারিপাশে বসে গ্রামীণ মেলাও।
ইঞ্জিন চালিত একটি ভ্যান গাড়িতে ৮ থেকে ১০ জন মাগুরার শালিখা থেকে আসা নজরুল, মানিক ও শফিকুল জানান, ‘এই ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে তারা সকাল ১০টায় এসেছেন। এসে বস্তা বিছিয়ে তারা খেলা দেখছেন। এতো দর্শক দেখে তারাও অবাক।’
জিহাদ নামে এক যুবক জানান, ‘ফুটবল খেলা তৃণমূল মানুষের আবেগ; সেটা এই দর্শক দেখে বুঝা যায়। অংশগ্রহনকারী দুই জেলার দর্শক ছাড়াও বাঘারপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মানুষ নছিমন করিমনে এসেছে। মাঠের চারিপাশে জায়গা না হওয়াতে মাঠের পাশের বিভিন্ন উচু ভবন ও গাছে উঠে খেলা দেখতে দেখা গেছে। ফুটবলের গণজোয়ার বইছে এই ফাইনালে।’
খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব। এ সময় তিনি বলেন, ‘ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বাঘারপাড়ায় উৎসবের নগরীতে পরণত হয়েছে। মাঠে জায়গা নাই দর্শকের। আমি দুই দলের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অভিভূত হয়েছি বিপুলসংখ্যক দর্শক দেখে। আমাদের সময়েও অনেক দর্শক হতো। কিন্তু বাঘারপাড়ার কোনো মাঠে এত দর্শক এর আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। ফুটবল যে কত জনপ্রিয় খেলা, আজ আবার তা স্মরণ করিয়ে দিল।’
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তানিয়া রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাসসুর রহমান, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও টুনামেন্টের পৃষ্টপোষক মাহাবুর রহমান, আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুল জব্বর বিশ্বাস। টুর্নামেন্টের আয়োজকরা জানান, তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে রেখে সুস্থ ধারার খেলাধুলায় ফিরিয়ে আনাই ছিল এই টুর্নামেন্টের মূল উদ্দেশ্য।

