সাতক্ষীরা সংবাদাতা
সাতক্ষীরার সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের বিএনপি কর্মী ইসলাম মোড়লকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে এবার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সদর সার্কেলের সাবেক এসপি কাজী মনিরুজ্জামান, ডিবির সাবেক ওসি এনামুল হক, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা জজকোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, এএসআই পাইক দেলোয়ার, সদর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. নাসির উদ্দীন, এস আই বিধান কুমার বিশ্বাসসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের নিহত ইসলাম মোড়লের ভাই ইসরাইল মোড়ল। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামিরা হলেন, জজ কোর্টের সাবেক এপিপি ওকালত হোসেন, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহাজাদাসহ ৩৫ জন। মামলায় ১৫/ ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ জুন আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আহমেদ স্বপনের বাড়িতে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে নিহত ইসলাম মোড়লকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ জুন রাত আনুমানিক ১ টার দিকে উল্লেখিত আসামি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইসলাম মোড়লের বাড়িতে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে চোখ বেধে নিয়ে গিয়ে ছয়ঘরিয়া নামক স্থানে গুলি করে হত্যা করে। বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. আবুবকর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি এসময় বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
অপরদিকে সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের লোকমান দফাদারের ছেলে শিবির কর্মী হাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যার দায়ে সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সদর সার্কেলের সাবেক এসপি কাজী মনিরুজ্জামান, ডিবির সাবেক ওসির এনামুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন, জজকোর্টের সাবেক পিপি এডভোকেট আব্দুল লতিফসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত শিবির কর্মীর ভগ্নিপতি সলেমান সরদার সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন । এছাড়া পৃথক সময়ে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার তৎকালীন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি আবুল কালামকে হত্যার দায়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, দেবহাটা থানার ওসি তারক বিশ্বাস, কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হকসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।