সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সরিষার মাড়াই মেশিনে দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক শ্রমিকের ডান হাত সফলভাবে পুনঃসংযোগ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
গত ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজারের একটি সরিষা তেল কারখানায় কর্মরত ওই শ্রমিকের ডান হাত মাড়াই মেশিনে আটকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অর্থোপেডিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. প্রবীর কুমার দাস ও ডা. বি. কে. মন্ডলের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল প্রায় ছয় ঘণ্টাব্যাপী জটিল অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মাইক্রোসার্জারির মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হাতের স্নায়ু, রক্তনালী, হাড় ও পেশি পুনরায় সংযুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ এই অস্ত্রোপচার শেষে হাতটি সফলভাবে পুনঃসংযোগ সম্ভব হয়।
অপারেশনের বিষয়ে ডা. প্রবীর কুমার দাস জানান, এটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল একটি অস্ত্রোপচার।
তবে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনা এবং চিকিৎসক দলের সমন্বিত প্রচেষ্টার কারণে অপারেশন সফল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অস্ত্রোপচারের পর রোগী বর্তমানে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং আশাব্যঞ্জকভাবে হাত নাড়াতে পারছেন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ মো. আমিনুর রহমান জানান, এটি তাদের হাসপাতালের প্রথম সফল হাত পুনঃসংযোগ অপারেশন। এর ফলে এখন থেকে স্থানীয় রোগীরা ঢাকাসহ বড় শহরের হাসপাতালে না গিয়েই উন্নত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ পাবেন।
বিভাগীয় প্রধান ডা. বি. কে. মন্ডল বলেন, এই সাফল্য চিকিৎসক দলের দক্ষতা, আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং সরকারি সহযোগিতার ফল।
ভবিষ্যতে আরও জটিল ও বিশেষায়িত অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, এর মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার স্বাস্থ্যসেবায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো এবং সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় হবে।
