বেনাপোল সংবাদদাতা
বেনাপোল স্থলবন্দরের ১৭ নং পণ্যাগার হতে শেড ইনচার্জ মতিনুল হকের যোগসাজে শুল্ক ফাঁকি চেষ্ঠায় পণ্য পাচারকালে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ফেব্রিক্স জব্দ করেছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদীন ধরে একটি অসাধু চক্র বেনাপোল স্থলবন্দরের কতিপয় অসাধু কাস্টমস ও বন্দর কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই ভারত হতে পণ্য আমদানি করে ও বিশেষ সুবিধায় বন্দর, কাস্টমস, শুল্ক গোয়েন্দা ম্যানেজ করেই দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পৌঁছে দিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে বন্দরের ১৭ নং পণ্য শেড হতে বাংলাদেশি ট্রাক খুলনা মেট্রো ট-১১-২১৬৭ নাম্বার ট্রাক যোগে পণ্য লোড কালীন সময়ে বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলা চৌধুরী এর নেতৃত্বে কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা পণ্য চালানটি জব্দ করেন। পণ্য চালানে শাটিং পিস,থ্রিপিস, শাড়ি ও প্যান্ট পিস রয়েছে বলে জানাগেছে। সংবাদ লেখাকালীন সময়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি জব্দকৃত মালামালের ওজন নির্ধারণের কাজ চলছে।
অভিযুক্ত শেড ইনচার্জ মতিনুল জানান, সোমবার সকালে মিয়াম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের বর্ডারম্যান পরিচয়ে আব্দুল্লাহ নামের একজন আমার উপস্থিতিতে পণ্যাগারে কাস্টমস কর্তৃক জব্দকৃত পণ্যচালানটি ঢোকান। পণ্য চালানটি এন্ট্রির পূর্বেই বাংলাদেশি ট্রাকে লোডরত অবস্থায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে। গণমাধ্যম কর্মীদের জব্দকৃত পণ্য চালান সম্পর্কের বিষদ জানাতে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্য চালান আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) আজহারুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে তিনি পণ্যগারটি পরিদর্শন করেছেন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মাল গণনার কাজ করছেন। সাংবাদিকদের তথ্য দিতে অনীহা ও নিয়ম বহির্ভুত কাজে শেড ইনচার্জ জড়িতের প্রশ্নে তিনি বলেন এহেন কাজের দায় ভার শেড ইনচার্জ কোন ভাবেই এড়াতে পারেনা।
উল্লেখ্য বেনাপোল স্থলবন্দরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল ইসলামের দায়িত্ব পালন কালীন সময় থেকে স্থলবন্দরে চাঁদাবাজি, পণ্য চুরি, ঘোষাণা বহির্ভুত আমদানি পণ্য পাচার কার্যক্রম বহুগুণ বেড়ে যায়। কিছুদিন পূর্বে শেড ইনচার্জ তাপস স্থলবন্দরের ২২ নং শেড হতে ২২ লক্ষ টাকার কেমিকেল পণ্য পাচার পূর্বক বিক্রি করেছেন বলে নিলামক্রেতা অভিযোগ জানিয়েছেন। সাম্প্রতি সময়ে সরকার পতনের পর হতেই বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় সরকারী রাজস্ব ফাঁকিতে জড়িতরা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠেছে।
বন্দরের বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ফাঁকি রোধে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের চৌকস কর্মকর্তাদের নজরদারি বৃদ্ধির কারণে বেনাপোল স্থল বন্দরে অনেক বড় বড় শুল্ক ফাঁকির চালান আটক হচ্ছে। যেখানে কাস্টমস, কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও বিজিবি বা বিএসবি এ ধরনের শুল্ক ফাঁকির চালান আটক করতে অক্ষম সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের কর্মকর্তারা সক্ষম হচ্ছে বা সফলতা দেখাচ্ছে এবং রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি রাজস্ব আহরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।