বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মধ্য মাঘেও শীত নেই। অনুভূত হচ্ছে গরম। এই গরমে গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা ফুল সময়ের আগেই ফুটে যাচ্ছে। তাই দ্রুত ফুল কেটে ফেলতে হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা।
কৃষি বিভাগ ও ফুলচাষি সূত্রে জানা গেছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুন ঘিরে বছরের এই সময়ে ফুলচাষিদের ব্যাপক প্রস্তুতি থাকে। ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ভালো দামে ফুল বিক্রির আশায় ক্ষেতেই গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা ফুল সংরক্ষণ করেন চাষিরা। কিন্তু এ বছর জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহজুড়ে হঠাৎ আবহাওয়ায় পরিবর্তন ঘটেছে। দিনের বেলায় আকাশ মেঘলা, রাতে কুয়াশা। গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে ফুল দ্রুত ফুটে যাচ্ছে। সতেজতা হারাচ্ছে সব ধরনের ফুল।
গদখালী পাইকারি ফুল বাজার ঘুরে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে এই বাজারে গোলাপ প্রতিটি দেড় থেকে আড়াই টাকা, জারবেরা ৪ থেকে ৭ টাকা, রজনীগন্ধা ৩ থেকে ৪ টাকা ও গাদা ফুল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে প্রতি হাজার পাইকারি বেচাকেনা হচ্ছে। পানিসারা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে গোলাপ, গাদা, জারবেরা গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা, জিসপি, ঝাউ আর কামিনীপাতার বাগান। কৃষক মাঠে ফুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত। গোলাপ ও জারবেরা ফুল কেটে সকালে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন ফুলচাষিরা।
ফুল কাটতে কাটতে গোলাপ চাষি রাসেল আহমেদ বলেন, বছরের এই সময়ে প্রতিটি গোলাপের পাইকারি দাম থাকে ১০ থেকে ১৫ টাকা। কিন্তু এবার সেখানে চার ভাগের এক ভাগ দামও পাওয়া যাচ্ছে না। গরমের কারণে দ্রুত ফুল ফুটে যাচ্ছে। গোলাপের কড়িতে ক্যাপ পরিয়ে খেতেই ফুল সংরক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে। রাসেল ৫০ শতক জমিতে গোলাপ ও ৩৩ শতকের জমিতে রজনীগন্ধার চাষ করেছেন।
পানিসারা গ্রামের মাঠে দুই বিঘা জমিতে জারবেরা, এক বিঘা করে গাদা ও রজনীগন্ধা ও আট শতক জমিতে চন্দ্রমল্লিকার চাষ করেছেন কৃষক মো. মিন্টু গাজী। তিনি বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে জারবেরা ১৪ থেকে ১৬, রজনীগন্ধা ৮ থেকে ১০, গাদা প্রতি হাজার ৮০০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেছি। এবার সেখানে ফুলের দাম একেবারেই পড়ে গেছে। আমার আব্বা ৩০০টি রজনীগন্ধা ফুল বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারেননি। গতকাল প্রতিটি ৪ টাকা দরে ২০০ রজনীগন্ধা ফুল বিক্রি করা হয়েছে। ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুনের আগে দর না উঠলে কৃষক মাঠে মারা যাবে। কারণ, সারা বছর আমরা ফুলের পরিচর্যা করি এই দিবস দুটি ঘিরেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, দুই দিন ধরে আবহাওয়ায় হঠাৎ পরিবর্তন ঘটেছে। এতে গরম অনুভূত হচ্ছে। জারবেরা হলো শৌখিন ফুল। এই ফুলের উপযোগী পরিবেশ দিতে হয়। গরমের কারণে জারবেরা-গোলাপের সতেজতা নষ্ট হয়। বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। আশা করছি, দুই এক দিনের মধ্যে আবার একটু ঠান্ডা পড়বে। ফুলের দাম আবার বাড়বে। মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ফুল শিল্পের অগ্রগতির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে কয়েকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-ফুল পরিবহন সহজ ও সুলভ করার জন্য গদখালীতে একটি রেলওয়ে স্টেশন স্থাপন, ফুল সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণ, ফুলের চারা উৎপাদনের জন্য গদখালীতে টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপন। এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে ফুলের চারা আর ভারত থেকে আনার প্রয়োজন হবে না। কৃষক ফুলের ন্যায্য দাম পাবেন।
শিরোনাম:
- যশোরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
- আ. লীগের লিফলেট বিতরণের প্রতিবাদে চৌগাছায় ছাত্রদলের মশাল মিছিল
- সংসার চালাতে মা-ছেলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
- বৈরি আবহাওয়ায় বিপাকে ফুলচাষিরা
- যশোরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ
- যশোরে স্কুল ভলিবলে চ্যাম্পিয়ন আঞ্জুমান আরা একাডেমি
- আজ শুরু হচ্ছে সালতাপীরের ঢিবির খনন
- মাগুরায় টি-১০ ক্রিকেটে কাশবন পলিটেকনিক চ্যাম্পিয়ন