বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) অধ্যক্ষ ডা. আবু হাসানাত মো. আহসান হাবীব’কে ঢাকা বিমানবন্দরে ২০ লাখ ঢাকা বিমানবন্দর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আটক হওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন অধ্যক্ষ ডাঃ আহসান হাবীবসহ ও অনান্য কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দিয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশীদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর  তারিখের বৈঠকে স্থানীয় উদোগে হাসপাতালের আইসিইউ পরিচালনার জন্য প্রত্যেক রোগীর নিকট ভর্তি ফিস বাবদ এক হাজার টাকা এবং দৈনিক বিছানা ভাড়া ৫০০ টাকা নিয়ে একটি তহবিল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। এই টাকা দিয়ে হাসপাতালের আইসিইউ’র দৈনন্দিন খরচ, বেসরকারিভাবে নিয়োজিত সেবাকর্মীদের (আয়া, ক্লিনার, গার্ড ও বয়) বেতন প্রদান, প্রয়োজনে গরীব ও দুঃস্থ রোগিদের সহায়তা প্রদান এবং অকেজো হয়ে পড়া যন্ত্রপাতি তাৎক্ষনিক মেরামতসহ অতীব জরুরী যন্ত্রপাতি যা সরকারিভাবে প্রাপ্যতা নিশ্চিত নয় তা ক্রয় করে আইসিইউ সেবা অব্যহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এই ব্যাপারে যমেক অধ্যক্ষ ডা. আবু হাসানাত মো. আহসান হাবীবকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যমেক অধ্যক্ষকে প্রধান করে উক্ত তহবিলের একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। এই ধারাবাহিকতায় প্রায়শই অতীব জরুরি যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র আইসিইউ নয় অপারেশন থিয়েটারেও অনেক যন্ত্রপাতি জরুরি প্রয়োজনে কেনা হয়েছে রোগীদের অপারেশন সেবা বৃদ্ধি এবং তা অব্যাহত রাখার জন্য।

তিনি বলেন, সম্প্রতি অপারেশণ থিয়েটার এ অত্যাবশ্যক একাধিক যন্ত্র (ডায়াথার্মি ও মনিটর) অকেজো হয়ে পড়ায় অপারেশন সেবা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছিলো এবং একই সাথে বেডের তুলনায় মনিটর অনেক কমে যাওয়ার কারনে আইসিইউ সেবা প্রদান সম্ভব হয়ে উঠছিলো না। আইসিইউ তহবিলে পর্যাপ্ত পরিমান স্থিতি থাকায় যমেক অধ্যক্ষ ডা. আবু হাসানাত মো. আহসান হাবীব ২০ লাখ টাকা নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ওই সকল যন্ত্রপাতিসহ আনুসাঙ্গীক আরও কিছু মালামাল ক্রয়ের লক্ষ্যে ঢাকা’র উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ব্যাগ এ টাকার অস্তিত্ব বোঝা গেলে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন। টাকার উৎস এবং বহনের উদ্দেশ্য সংক্রান্ত প্রমাণক দাখিলের পর তারা ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে তহবিলটি ব্যবহার করার পরামর্শ প্রদান করেন। উক্ত ঘটনার আলোকে ডা. আবু হাসানাত মো. আহসান হাবীব ওই দিন যন্ত্রপাতির কোটেশন নিয়ে অর্ডার নিশ্চিত করে টাকা নিয়ে ফেরত আসেন এবং পরবর্তিতে ব্যাংক একাউন্ট করার পর যন্ত্রপাতির দাম একাউন্ট ট্রান্সফার এর মাধ্যমে পরিশোধ এর ব্যবস্থা করেন যে প্রক্রিয়া এখনো চলমান।

যমেক অধ্যক্ষ ডা. আবু হাসানাত মো. আহসান হাবীব বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের সোর্স বা সংবাদের উৎসের ভুলের কারণে এ ধরণের গুজব বা বিভ্রান্তিকর তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০ লাখ টাকা একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন বা বহন না করে হ্যান্ড ক্যাশে বহন করা আমার ভুল। এই ভুলটি আমার বোকামি এবং সরল মনের কারণে হয়েছে। যেহেতু মালামাল ক্রয়ের কাজটি আমার এজন্য আমি টাকাটি নিজেই বহন করছিলাম। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তারা এই টাকা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন বা বহনের পরামর্শ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম, যশোর জেনারেল হাসপাতাল ডক্টরস্ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version