বিবি ডেস্ক
রাত পোহালেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে সহিংসতা রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ছড়িয়ে পড়ছে উত্তাপ। প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে সংঘর্ষ। এই সহিংসতা রুখতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্বাচনের আগে ও পরে চার স্তরের নিরাপত্তা ছক তৈরি করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে চলছে পুলিশের অভিযান।
নির্বাচনে সম্ভাব্য এজেন্টদের আগাম তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটের দিন এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীদের বায়োডাটা পুলিশ এবার আগাম সংগ্রহ করেছে। সেই তারাই এবার এজেন্ট হবেন কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সহিংসতাপূর্ণ আসনগুলোকে বেশি নজরদারির মধ্যে রেখেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, অতীতের সহিংসতাপূর্ণ আসনগুলো এ বছরও ঝুঁকিপূর্ণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাই বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভোটের দিন কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসারসহ দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাদের যাতে কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হতে হয় সে জন্য পুলিশ বিষয়টি নজরে রাখছে।
অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ এবার চার স্তরের নিরাপত্তাবলয়ের পরিকল্পনা করেছে। এগুলো হলো প্রথমত, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দ্বিতীয়ত, ভোটকেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তা, তৃতীয়ত, জেলা ও বিভাগীয় শহরের মূল সড়কে তল্লাশি ও টহল জোরদার করা, চতুর্থত, লোকসমাগমস্থলে পুলিশের পিকেট পার্টিকে সক্রিয় রাখা। এই চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা কার্যকর থাকবে যথাক্রমে ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন, ভোটের পরের দিন এবং সহিংসতার মাত্রা বেশি হয়ে গেলে তার পরের দিনগুলোতে।
নির্বাচনে ঢাকাসহ সারা দেশে পুলিশের ১ লাখ ৮৯ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। ঢাকায় থাকবেন ২১ হাজার সদস্য। ইতোমধ্যেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কিছু বাড়তি দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন উপকূলবর্তী এলাকা, দ্বীপ অঞ্চল ও পাহাড়ি জনপদে যাতে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়, সেই বিষয়টিও মাথায় রেখেছে পুলিশ। সহিংসতা রুখতে পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি তিন সদস্যের আলাদা আলাদা টিম গঠন করেছে। পুলিশ ভোটে সহিংসতা রুখতে মোবাইল প্যাট্রোলিংয়ে জোর দিয়েছে বেশি। বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ প্রথাগত সোর্সের মাধ্যমে যেখানেই সহিংসতার খবর পাবে, সেখানেই দ্রুত উপস্থিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।
পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকায় দ্রুত ফোর্স পাঠাতে র্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত থাকবে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনী।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনে সহিংসতা রুখতে পুলিশের প্যাট্রলিং অব্যাহত আছে। যারাই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত হবে, তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আগাম গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। ভোটের পরে যাতে সারা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সেই দিকে নজর দেয়া হবে।’
এ বিষয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নির্বাচনে নাশকতা রুখতে বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন।’
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার বিষয়টি নজর রাখছে পুলিশ। যেখানেই ঘটনা ঘটছে, সেখানেই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। তবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। ভোটের দিন যাতে কোনো চক্র হট্টগোল করে পরিস্থিতি ঘোলাটে না করতে পারে, সেই দিকে তাদের বেশি জোর দেবে। এ ছাড়া বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর ভোটকেন্দ্রগুলোতে তারা আলাদা নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলবে। ভোটের দিন ব্যালট বাক্স ও ভোটের সরঞ্জামগুলো যাতে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার প্রায় ১২ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। তবে এবার পুলিশের সাদাপোশাকে নজরদারি থাকবে। যাতে দ্রুত দুর্বৃত্তকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, সহিংসতা রুখতে ইতোমধ্যে দেশের আট মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জের ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এই বার্তায় নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জোর দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি অস্ত্র অভিযানে জোর দেয়া ও পুলিশের খাতায় থাকা সন্ত্রাসীদের ধরতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, নির্বাচনকে ঘিরে সাইবার জগতে কেউ যাতে অপপ্রচার করতে না পারে, সেদিকে নজর দিচ্ছে পুলিশের সাইবার ইউনিট। যারাই গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
শিরোনাম:
- যশোরে নারী সিএসও ও পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্মশালা
- সাবেক এমপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মাছ লুটের মামলা
- যশোরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন
- ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা অসহিষ্ণু আচরণ করে ছাত্র সমাজকে কলঙ্কিত করছে’
- যশোরে মাংস ও ডিমের দাম চড়া : নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পাতে আমিষের টান
- চার দশকে ‘হাজার কোটি টাকা’ জলে ভবদহের ৩৪১ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
- সাবেক এমপি রণজিৎ রায়, সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- যশোরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র জন্মদিন উদযাপন