মণিরামপুর সংবাদদাতা
যশোরের মণিরামপুরে এক কৃষকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার জলকর রোহিতা দাসপাড়ায় নির্মল দাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে আসা ৭-৮ জনের মুখোশধারী ডাকাতদল ঘরের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ঢুকে নির্মল দাস ও তার স্ত্রী সুষমা দাসকে মেরে রক্তাক্ত করে ৫-৭ ভরি স্বর্ণালংকার ও ধান বিক্রির নগদ ৪০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানিয়েছে।
এ সময় চিৎকার করতে চাইলে ডাকাতদল পরিবারের দুই শিশুকে হত্যার হুমকি দেয়। খবর পেয়ে মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রজিউল্লাহ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নির্মল দাস বলেন, ‘রাত সাড়ে তিনটার দিকে ৭-৮ জন লোক মুখোশ পরে এসে ঘরের গেটের তালা ভেঙে ফেলে। এরপর ঘরে ঢুকে আমাকে মারপিট শুরু করে। দৌঁড়ে পালাতে গেলে ওরা রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করলে মাটিতে পড়ে আর উঠতে পারিনি।
এরপর ডাকাতরা আমার স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলের বউকে মারপিট করে আলমারি ভেঙে ৫-৭ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ সময় চিৎকার করতে চাইলে ওরা বাড়ির দুই শিশুকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দেয়।’
ক্ষতিগ্রস্ত গৃহবধূ সুষমা দাস বলেন, ‘ডাকাতের হামলা দেখে ঘরের জানালা খুলে চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করি। তখন ওরা আমার মুখ চেপে ধরে খুব মেরেছে। চিৎকার করলে পিস্তল দিয়ে খুনের হুমকিও দেয় ওরা।’
নির্মল দাসের ভাইপো স্কুলশিক্ষক দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘সম্প্রতি কাকা ১৫০ মণ ধান বিক্রি করে আড়তদারের কাছে কিছু টাকা রেখে এক লাখ টাকা নিয়েছেন। হালখাতায় ৫৫ হাজার টাকা দেনা শোধ করে কাকা বাকি টাকা ঘরে এনে রাখেন।
ডাকাতদল বাড়ির অদূরে বাঁশতলায় পাকা রাস্তার উপর প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল রেখে বাড়িতে ঢোকে। তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে সেই গাড়িতে করেই চলে যায়।’ স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘রাত সাড়ে তিনটার দিকে চিৎকার শুনে লাঠি হাতে টেংরামারী ব্রিজের উপর এসে দাঁড়াই।
পরে দেখি পশ্চিমদিক থেকে একটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার আসছে। আমি সংকেত দিলে ওরা গতি কিছুটা কমায়। চিৎকারের বিষয়ে জানতে চাইলে ওরা বলে, পেছনে চিৎকার হচ্ছে।
এই বলে ওরা চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনায় এই প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে থাকা লোকজন জড়িত, এটা বুঝতে পারলে রাস্তায় কাঠ ফেলে ওদের আটকাতে পারতাম।’
খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক শাহাবুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেছি। আশপাশের বাজারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।’
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রজিউল্লাহ খান বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আহত ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তারা সুস্থ হয়ে থানায় এসে মামলা দিলে আমরা মামলা গ্রহণ করবো।’
