মণিরামপুর সংবাদদাতা
মণিরামপুর উপজেলার খাটুরা বাঁওড় দখলে নিতে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন বাঁওড় চাষ করে আসা খাটুরা বাঁওড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বাঁওড় দখলে নিতে মরিয়ে হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ইতোমধ্যে বাঁওড়ের সদস্যদের মোটা টাকার টোপ দিয়ে চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। উপায়ন্ত না পেয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে চুক্তিনামায় হাতে গোনা কয়েকজনের স্বাক্ষর করে বাঁওড় দখলে নিতে মাছ ছাড়তে চাইলেও বাঁওড়ের সদস্যদের বাঁধার মুখে ব্যর্থ হন। দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাওড়ের সদস্যরা।
রোববার বিকেলে মণিরামপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে খাটুরা বাওড় সমবায় সমিতির সদস্যদের পক্ষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন এসব অভিযোগ করেন। এ সময় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় রিয়াজুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ৯০’র দশকের আগে ইফাদ নামের একটি কোম্পানি ৫০ বছরের লিজ নিয়ে বাঁওড় চাষ করে আসছিল। এসময় খাটুরা বাওড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠিত হলে ইফাদ নামের ওই কোম্পানি বাঁওড়ে মাছ চাষের দেখভালের দায়িত্ব দেয় ওই সমবায় সমিতিকে।
এর মধ্যে ২০২১ সালে সরকার বাঁওড়টি ইজারার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলে ২০২২ সালের ৯ জুন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি হাইকোর্টে রিট করে। এরপর বাঁওড়ের মাছ চাষ, মামলা চালানোসহ যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য ২০২২ সালের ৩০ জুন হতে পরবর্তি ৫ বছরের জন্য রিপন ধর নামের এক ব্যক্তির কাছে লিজ প্রদান করে ওই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি।
এর মধ্যে হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর সরকারের ইজারাদানের নোটিশের বিপক্ষে স্থগিতাদেশ প্রদান করে। সেই থেকে চুক্তিমোতাবেক বাওড়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন রিপন ধর। কিন্তু গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর বাঁওড় দখলে নিতে মরিয়া উঠেন নজরুল ইসলাম গং। এমনকি আলতাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির নামে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ সময় সত্যতা যাচাই পূর্বক সত্য উদঘাটন করে ভুয়া অভিযোগকারি ও এলাকায় অশান্তি সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস, রিপন কুমার ধর, মকবুল হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, রেজাউল ইসলামসহ মৎস্যজীবী সমিতির প্রায় অর্ধশত সদস্য।