বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরে টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) কার্ড নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটেছে। কার্ড না পাওয়ার অভিযোগে সোমবার সকালে মণিরামপুর পৌরসভার সামনে রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বঞ্চিতরা। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চলা মহাসড়ক অবরোধে যানজটে আটকা পড়া দূর-দুরান্তের যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এতে রোগীবহনকারি এ্যাম্বুলেন্সসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে বঞ্চিতদের সাথে কথা বললে তারা অবরোধ উঠিয়ে নেন।
মেয়র, কাউন্সিলর না থাকায় ইউএনওসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের দিয়ে চলছে মণিরামপুর পৌরসভার কার্যক্রম। টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ), ভিজিএফ, ওএমএসসহ যে কোন কর্মসূচি এলেই তাই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টিসিবি পণ্য বিতরণে আগে ২ হাজার ৭১২টি কার্ড এলেও এবার এসেছে ২ হাজার ২৯৬টি স্মার্ট কার্ড। কিন্তু প্রযুক্তিগত (নিরাপত্তাজনিত গোপন পাসওয়ার্ড) কারণে সুবিধাভোগীরা তা হাতে পাচ্ছেন না। ইউএনও পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পেলেও গোপন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। যে কারণে ম্যানুয়ালি কার্ড দেয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
অপরদিকে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিকদলের মধ্যেও রয়েছে গ্রুপিং। এক গ্রুপকে দিলে অপর গ্রুপ অসন্তুষ্ট হয়। এতে তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। উভয় গ্রুপকে ম্যানেজ করে পৌরসভার কার্যক্রম চালানো দুরূহ হয়ে উঠেছে। কার্ড না পাওয়ায় পূর্বের সুবিধাভোগিরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চলে এ অবরোধ।
মণিরামপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব শাহিনুর ইসলাম জানান, বরখাস্তকৃত মেয়রের সময় নির্দিষ্ট সুবিধাভোগীদের নামে ১ হাজার ২৮৬ টিসিবি স্মার্ট কার্ড এবং সম্প্রতি এক হাজার ১০টিসহ সর্বমোট ২ হাজার ২৯৬ টি টিসিবি স্মার্ট কার্ড এসেছে। কিন্তু সাবেক পৌর মেয়রের নামে গোপন পাসওয়ার্ঢ থাকায় এই কার্ড নামধারীদের কাছে ইস্যু করা যাচ্ছে না। পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের আবেদন করা হয়েছে, সংশোধন হয়ে আসলে এ সমস্যা দূর হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।
পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়াজ মাখদুম জানান, পূর্বে পৌরসভার নয় ওয়ার্ডে টিসিবির ২ হাজার ৭১২টি কার্ড আসতো। কিন্তু এবার ৪১২টি কার্ড কম এসেছে বিধায় আগের সুবিধাভোগী অনেকেই বাদ পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই কম কার্ডের বিষয়টি কেউ মেনে নিতে পারছেন না। যার সব দায় এসে পড়ছে তাদের উপর।
মণিরামপুর পৌর প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানান, টিসিবির কার্ডের বিষয়টি নিয়ে উপজেলার রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বসা বৈঠকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।