বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০২ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন এই সভার আয়োজন করে। সভায় মধুমেলার সময় নির্ধারণ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
আলোচনার সভাপতি জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম স্পষ্ট করে বলেন, আমরা যে কাজ করি সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়া করি না। তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি ভিন্ন হয় উল্লেখ করে বলেন, যখন নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করা হয়, তখন নির্বাচনের সাথে জড়িতরা নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে চলে যায়।
মধুমেলার বিষয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রী পরিষদের সাথে কথা বলে নির্বাচন, রোজা ঈদ সার্বিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হয়। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর নির্বাচনের আগে মেলা করার চেষ্টা করা যেতে পারে।
আজাহারুল ইসলাম আরও জানান, মধুসূদন পদক রাষ্ট্রীয় পদক না হলেও রাষ্ট্রীয় পদকের মত মূল্যবান। তাই ২৫ জানুয়ারি কবির জন্মদিনে মধু পদক দেয়া হবে। মেলার বিষয়ে তিনি বলেন, মেলার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যে নির্দেশনা দেবে সেভাবে করব।
প্রস্তুতি সভার শুরুতে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন নির্বাচনের পর মেলার আয়োজন করার প্রস্তাব করেন। তার সাথে একমত প্রকাশ করে ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মেলা আয়োজনের একই কথা জানান কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, সাংবাদিক রুহুল কুদ্দুস ও ওয়াজেদ খান ডাবলু।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি কেশবপুরের সংগঠক সম্রাট হোসেন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে মেলার আয়োজন করা হোক। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ভোটের পর মেলার পরিবেশ নাও থাকতে পারে। প্রয়োজনে মেলার সময় কমানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক রাশেদ খান মেলা পেছানোর যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন নির্বাচনের মত হবে, মেলা হবে মেলার মত।
জামায়াত নেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক আবুল হাশেম রেজা ঐতিহ্য ধরে রাখার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, মধুমেলা কেন্দ্র করে দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ থাকে। নির্বাচনের পর রোজা, ঈদ, বর্ষা গরম। যখন যে সময়ে যা হয়ে আসছে তখন তাই করা দরকার। ঐতিহ্য ধরে রাখতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেলা করা হোক।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আকরামুজ্জামান, কেশবপুর পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি জাকির হোসেন নির্দিষ্ট সময়ে মেলা না হলে মেলার গুরুত্ব ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তি ও শিক্ষকরাও নির্দিষ্ট সময়ে মধু মেলা করার প্রস্তাব করেন।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমীন বলেন, সবার সার্বিক সহযোগিতা থাকলে মেলার কোনো সমস্যা হবে না।
মধুমেলার শুরুর তারিখ নির্ধারণ করতে প্রায় ১ ঘণ্টা আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক সব পক্ষের মতামত শোনার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকার কথা জানান।