বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হাসান নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। রবিবার (০৭ ডিসেম্বর) রাতে নিহতের পিতা মিন্টু হোসেন যশোর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগনেতা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবুলসহ
আট জনের নামে মামলা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত করা হয়েছে আরও ৪/৫জনকে। এই হত্যাকান্ডে সাবেক কাউন্সিলর বাবুলই নির্দেশদাতা ছিলেন বলে মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকায় একটি সড়কের পাশে ছুরিকাঘাত হয়ে তানভীর রক্তান্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এসময় তার শরীর তল্লাশি করে একটি কাচের বোতলে ৬১ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
নিহত তানভীর নাজির শংকরপুর এলাকার মিন্টুর ছেলে। তানভীরের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৫ টি মামলা রয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে চোপদারপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম স্বাক্ষর ও চোপদারপাড়ার বেলায়েত আলীর ছেলে সোনা মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
মামলায় আসামীরা হলেন, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবুল, শংকরপুর ছোটনের মোড়ের সন্ত্রাসী মুসা, সাব্বির, রাকি্ুল ইসলাম, সাক্ষর, চোপদার পাড়ার সোনা মিয়া, একই এলাকার আব্দুল্লাহর ছেলে অভি, মজিবরের ছেলে মানিক এবং শংকরপুরের আল আমিন ওরফে চোর আলামিন।
এর মধ্যে সাক্ষর ও সোনা মিয়াকে এই মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তানভীর হাসান আগে মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ করতেন এবং সর্বশেষ তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এর আগে তানভীরের বন্ধু আফজাল খুন হন।
ওই খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বাবুলসহ অন্য আসামিদের। আফজাল হত্যা নিয়ে তানভীর প্রতিবাদ করে আসছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বাবলুসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে শত্রুতা চলছিল।
এর জেরে শনিবার রাত ১০টার দিকে বাবুল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা তানভীরের বাড়িতে যান।
তানভীরকে না পেয়ে তারা ভাঙচুর চালায় এবং হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে শংকরপুর আনসার ক্যাম্পের পেছনে একা পেয়ে বাবুল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা একের পর এক ছুরিকাঘাত ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তানভীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন জানান, দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার সন্ধ্যার পর আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

