রিজাউল কমির, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের দুই ধারে কয়েকশ’ রেইনট্রি গাছ অজানা কারণে মারা যাওয়ায় গাছের ডালপালা ভেঙে সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। জীবিত গাছগুলোও মারা যাবার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে মৃত গাছ ভেঙে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনার আশংকায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা এসব গাছ কেটে নতুন গাছ লাগানোর দাবি জানিয়েছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরার সঙ্গে আশাশুনি সড়কটির ভালুকা চাঁদপুর, কোমরপুর, কুল্ল্যার মোড়, কাদাকাটি, বুধহাটা, শোভনালী, গোয়ালডাঙা ও বড়দল এলাকায় দুই ধারের প্রায় সব গাছই মারা গেছে।

সাতক্ষীরার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার যোগাযোগের ২৪ কিলোমিটার এই সড়কের দুই ধারে ৩০ বছর আগে শিশু বা রেইনট্রি গাছ লাগায় জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বছর খানেক আগে সড়কটির বেশ কিছু স্থানে লম্বা লম্বা গাছগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে। বর্তমানে গাছগুলো একেবারে শুকিয়ে ছাল উঠে গেছে। তবে এর সুনির্দিষ্ট কোন কারণ জানা যায়নি। ঝড় বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। অনেক সময় সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হয়। সাতক্ষীরা সামাজিক বনবিভাগের সহকারি বনসংরক্ষক নুরুন্নাহারের ধারণা এক ধরনের পোকার আক্রমণে এসব গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে।

কুল্ল্যা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, আশাশুনি থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে লাগানো শিশু গাছ এক বছর আগে পোকা লেগে শুকিয়ে গেছে। চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। জেলা পরিষদকে বারবার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।

ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, গাছগুলোর বয়স অনেক। সবাই বলছে পোকা লেগেছে। ডাল ভেঙে পড়ে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। গাছগুলোর জন্য স্থানীয়রা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে।

সাতক্ষীরা সামাজিক বনবিভাগ সহকারী বন সংরক্ষক নুরুন্নাহার জানান, গাছগুলো মারা যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ বনগবেষণা ইনস্টিটিউটকে জানিয়েছিলাম। একটি টিম এসে শুকনা কাঠ ও পোকার নমুনা নিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ‘লাক্ষা’ নামের এক ধরনের পোকার কারণে গাছ মারা যাচ্ছে। রিপোর্ট এলে সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, বেশ কিছুদিন আগে জেনেছি আশাশুনি সড়কের পাশে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এক ধরনের পোকার উপদ্রবে গাছের ছাল নষ্ট হচ্ছে। গাছগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। দুটি টিম গঠন করা হয়েছে গাছ মার্কিং করার জন্য। অনতিবিলম্বে টেণ্ডারের মাধ্যমে মরা গাছগুলি অপসারণ করা হবে।

Share.
Exit mobile version