মাগুরা সংবাদদাতা
মাগুরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান।
সোমবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মুখে পড়ে প্রধান শিক্ষক পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ অক্টোবর বিদ্যালয়ের নিয়মিত অ্যাসেম্বলির সময় প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় জামায়াতে ইসলামী মনোনীত দুই প্রার্থী মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী সাবেক জেলা আমির আব্দুল মতিন ও মাগুরা-২ আসনের প্রার্থী এম.বি. বাকের বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার ও মূল্যবোধ গঠনের স্থান। সেখানে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া অনুচিত এবং তা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে।
অভিযোগের বিষয়ে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী এম.বি. বাকের বলেন, আমরা কেবল শুভেচ্ছা জানাতে ও দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিইনি।
তবে মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী আব্দুল মতিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, বিদ্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্থান নয়। শিক্ষা পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সংবেদনশীল থাকতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাশ্বতী শীল জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য আগামী সপ্তাহের আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দলীয় প্রচারণার স্থান নয়। এ ধরনের ঘটনা নির্বাচনী আচরণবিধিরও লঙ্ঘন হতে পারে।
অভিভাবক ও সচেতন মহল ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
