বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে যুবককে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি ও না দেয়ায় পায়ে গুলি করার অভিযোগে তৎকালীন কোতোয়ালি থানার ওসি শহিদুল ইসলাম, টিএসআই রফিকসহ ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
তবে এই মামলার ঘটনায় অভিযুক্ত এস আই শোয়েব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই ঘটনার সাথে কখনোই জড়িত ছিলাম না মামলার ঘটনার সময় আমি যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় কর্মরত ছিলাম। থানায় দায়িত্ব পালনকালীন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপারেশনে অংশগ্রহণ করি। যা ছিল সরাসরি উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা এবং তাদের নেতৃত্বে। বর্ণিত মামলার ঘটনায় তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমি শুধু আমার উপরে অর্পিত সরকারি দায়িত্ব এবং উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পালন করেছি। আমি উদ্দেশ্যমূলক কাউকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এবং শত্রুতা করে কারো সঙ্গে কোন কিছু করিনি। এবং আমি কোন প্রকার কোন বেআইনি কর্মকাণ্ড করিনি। সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমি নিয়মের মধ্যে থেকে পালন করার চেষ্টা করেছি। মামলার ঘটনায় তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। একই দাবি করেন মামলার অপর অভিযুক্ত এসআই জামাল উদ্দিন।
মামলাটি করেছেন ওই যুবকের বাবা শহরের আরএন রোডের বাসিন্দা বাবু শিকদার। মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম, চাঁচড়া ফাড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই জামাল উদ্দিন, এসআই মাসুদুর রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এটিএসআই আবু বক্কর সিদ্দিকি, পুলিশ কন্সটেবল খাইরুল ইসলাম, আবু জাফর, জাহিদ সজীবুল, আব্দুল আলীম, জিন্নাত আলী, তারেক ও সোহাগ।
অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া কোতোয়ালি থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী তানজিন নূর পূর্বাশা। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ছেলে সালমান সিকদার ভিকি তার ব্যবসায় সাহায্য করতেন। ২০১৪ সালের ১৫ জুন বিকেলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। এমন সময় এসআই জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ভিকিতে আটক করে একটি গাড়িতে করে নিয়ে যান। এসময় বাদীকে চাঁচড়া ফাড়িতে আসতে বলেন। বাদী দ্রুত ফাঁড়িতে যান।
এ সময় তার সামনেই ভিকিকে ব্যাপক মারপিট করে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখান আসামিরা। এসময় বাদীর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অন্যথায় ভিকিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে জানান আসামিরা। এসময় বাদী হাতপায়ে ধরে ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। একপর্যায় তিনি ১০ লাখ টাকা ম্যানেজ করে আসামিদের হাতে দেন। এরপর ফের বাকি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় পুনরায় ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। টাকা না দেয়ায় তার ছেলেকে গাড়িতে উঠিয়ে চলে যান আসামিরা। এরপর রাত ১০টার পর চাঁচড়া কবরস্থানের পাশ থেকে ভিকির গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে।
এসময় দেখতে পান আসামিরা বাদীর পায়ে গুলি করেছে। পরে ভিকিকে প্রথমে যশোরে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। একপর্যায় ভিকির বাম পা কেটে বাদ দিতে হয়। এরপর থেকেই ভিকি পঙ্গুত্ব বরণ করে। এরপরও ভিকির নামে দুইটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয় বলে বাদী উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে বাদী কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে বাদীকেও ক্রসফায়ার ও হত্যার ণ্ডমকি দেয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। সরকার পতনের পর পরিস্থিতি অনুকুলে আসায় ঘটনার ১০ বছর পর তিনি আদালতে এ মামলা করেন।