বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) আলোচিত ‘লিফটকাণ্ড’ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল করিমের দায়ের করা রিট পিটিশন গ্রহণ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসাইন এই নির্দেশ দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রিটের আদেশের সার্টিফাইড কপি পেয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মোস্তফা গোলাম কিবরিয়া।
মামলার বাদী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাসিন্দা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ যশোর জেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম জানান, যবিপ্রবিতে ১৪টি লিফট স্থাপন নিয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। দুর্নীতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবং লিফটের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে তিনি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। মহামান্য হাইকোর্ট তার রিটপিটিশন গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী মোস্তফা গোলাম কিবরিয়া জানান, যবিপ্রবিতে ১৪টি ‘মেশিনরুম টাইপ’ লিফট স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করা হলেও সেখানে ‘মেশিনরুম লেস টাইপ’ লিফট গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকায় হাইকোর্ট রিটটি আমলে নিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসাইন গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রিটের আদেশের সার্টিফাইড কপি তিনি হাতে পেয়েছেন।
আদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আদেশের কপি পাওয়ার পর সুষ্ঠু তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসাথে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
যবিপ্রবি’র লিফট বুঝে নেয়া কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গালিব জানান, লিফট স্থাপন নিয়ে হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি শুনেছেন। তবে রুলের কোনো কপি এখনও পাননি। কপি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীর সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র এখনও পাননি।
প্রসঙ্গত, গত বছর মে মাসে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪টি লিফট স্থাপন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সাড়ে ১০ কোটি টাকার এই কাজে বড় ধরণের অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দরপত্রের একাধিক শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪টি লিফটের এই মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল, ‘মেশিনরুম টাইপ’এর পরিবর্তে ‘মেশিনরুম লেস টাইপ’ লিফট সরবরাহ। একইসাথে ডোর সাইজ এবং মোটরপাওয়ার দরপত্র অনুযায়ী কম মানের সরবরাহ করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী সরবরাহকৃত লিফটের তিনটি ক্যাটাগরিতে ‘নন কমপ্লাই’ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেয় লিফট বুঝে নেয়া কমিটি। কিন্তু তারপরও স্থাপন করা হয়।