বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মামুনুল হক বলেছেন, ‘হাজারো প্রাণের বিনিময়ে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের অর্জন ঘরে তোলা যাবে কিনা এখন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ের অর্জন টিকিয়ে রাখতে গণভোটে জুলাইয়ের পক্ষের শক্তিগুলোকে সংঘবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি’। মঙ্গলবার রাতে প্রেসক্লাব যশোরে জেলা খেলাফত মজলিসের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যশোর জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাসুম বিল্লাহের সঞ্চালনায় মামুনুল হক বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে গণভোট দিলে জুলাই বিপ্লবের তাৎপর্যকে হীন করা হবে। তাই সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট দেয়ার বিকল্প নেই। গণভোটে হ্যাঁ প্রতিকের ভোট দেয়ার জন্য জুলাইয়ের পক্ষে সব শক্তিগুলোকে সংঘবদ্ধ জনগণের দ্বোরগোড়ায় যাওয়ার আহবান জানান তিনি। জুলাই সনদ ব্যর্থ করার জন্য একটি চক্র দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। জুলাই সনদ সফল হলে ১৯৭২ সালের বন্দবস্ত ধ্বংস হবে। যারা জুলাই সনদের পক্ষে থাকবে না স্পষ্টত তারা সবাই ১৯৭২ সালের সংবিধানের পক্ষে। এখন প্রমাণ দেয়ার সুযোগ এসেছে কারা ৭২ এর পক্ষে আর কারা ২৪ এর পক্ষে’।
মামুনুল হক আরো বলেন, ১৯০৫ সালে মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গভঙ্গ করেছিলেন। হিন্দুৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য সেই সময়ে সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে হিন্দুরা বঙ্গভঙ্গ বাতিল করেন। সেই সময়ে মুসলানদের ব্রিটিশরা ঠকিয়ে যান। তারপর পাকিস্তানীদের নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়। সেই সময়ে পূর্ববাংলা দিল্লির বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদ করে। পকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়। পাকিস্তানীদের বৈষম্যের কারণে ১৯৭১ সালের জন্ম হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়ে শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি পাকিস্তান থেকে প্রথম ভারতে যান। সেখানে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করে দেশে ফেরেন। ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবের পকেটে একটি চিরকুট দিয়ে দেন। সেই চিরকুট অনুযায়ী ১৯৭২ সালের সংবিধান রচিত হয়। পরোক্ষভাবে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়ে। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। জুলাই সনদে ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সব ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। তাই দেশবাসীকে জুলাই সনদের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আতাউল আমিন এবং মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান। এছাড়াও খুলনা মহানগর সেক্রেটারী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা ওলিউল্লাহ মাহমুদ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- হাফেজ মাওলানা রমিজ উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা বেলায়েত হোসেন, মুফতি হাফিজুর রহমান, মাওলানা নাজির উদ্দিন, মুফতি মহিউল ইসলাম, মুফতি আবু হুরাইরা, মুফতি হাবিবুল্লাহ, মাওলানা শহিদুল্লাহ কাসেমী প্রমুখ।
সভায় সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চারে সদস্য সংগ্রহ, জনসংযোগ এবং আগামী দিনের করণীয় বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভার শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন খেলাফত মজলিশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান ও সদস্য মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ মাহমুদ।

