বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরের জয়পুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক বজলুর রহমান ও আনিসুর রহমানকে বিচারবর্হিরভূত হত্যার ঘটনায় যশোরে সাবেক পুলিশ সুপার (বর্তমান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি) আনিসুর রহমান, মণিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি-এসআইসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
বুধবার বিকালে নিহত পল্লী চিকিৎসক বজলুর রহমানের স্ত্রী রেশমা বেগম ও নিহত আনিসুর রহমানের ভাই মুনছুর আলী বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। মণিরামপুর আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ অভিযোগ দুইটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখে দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী এমএ গফুর ও শহীদ মো. ইকবাল হোসেন।
পল্লী চিকিকৎসক বজলুর রহমান হত্যার মামলার আসামিরা হলন, যশোরে সাবেক পুলিশ সুপার (বর্তমান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি) আনিসুর রহমান, মণিরামপুর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্যা খবির আহমেদ, এসআই তাসমীম আহমেদ, এসআই শাহীন, মনিরামপুরের দত্তকোনা গ্রামের মৃত হাতেম আলী মালীর ছেলে কাজী মাহামুদুল হাসান, হাকোবা গ্রামরে আনিচুর রহমান, হাজরাকাটি গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শহিদুল ইসলাম শাহিন।
আনিসুর রহমান হত্যা মামলার আসামিরা হলো, যশোরে সাবেক পুলিশ সুপার (বর্তমান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি) আনিসুর রহমান, মণিরামপুর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আজম খান, এসআই হিরণ, হাকোবা গ্রামের গোলাম ড্রাইভারের ছেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমাজাদ হোসেন লাভলু, বাবলু হোসেন, হাজরাকঠি গ্রামের মৃত দূর্গাপদ সিংহের ছেলে সুব্রত সিংহ, বাদল সিংহ, মুজাহার সরদারের ছেলে মজিদ সুপার, মৃত সামছুর গাজীর ছেলে আয়ুব আলী গাজী, মৃত নওশের মেম্বরের ছেলে মুনতাজ হোসেন, ইব্রার ছেলে আবুল কালাম, মৃত সালাম দফাদারের ছেলে ইউনুচ আলী দফাদার, মৃত আমিন গাজীর ছেলে তুরাব আলী গাজী, মৃত কানকাটা আক্কাসের ছেলে ইস্রাফিল, মনি মহলদারের চেলে হামিদ, মৃত সালাম দফাদারের ছেলে মহাসীন দফাদার, মৃত আক্কেল দফাদারের ছেলে রোস্তম আলী, মতিয়ার রহমানের ছেলে তুষার, ইসমাইলের ছেলে সবুজ, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে শামীম হোসেন, আবুল হোসেনের ছেলে বুলবুল হোসেন, মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শহিন হোসেন, মৃত সামছুর রহমানের ছেলে মিল্টন হোসেন, সমসকাঠি গ্রামের মৃত হাশেম গাজীর ছেলে জামাল হোসেন, হবির হোসেন মেহেদী, মৃত সাখাওয়াতের ছেলে ইকবাল হোসেনম, জয়পুর গ্রামের মৃত সালাম দফাদারের ছেলে মনজুর হোসেন, মোক্তার গাজীর ছেলে মারুফ হোসেন, মৃত খোকনের ছেলে ডিস হামিদ, দায়েম দফাদারের ছেলে আলমগীর দফাদার, মৃত একাব্বর মোল্যার ছেলে হোসেন মেম্বর, মোজিদ সুপারের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, মৃত আনার মোল্যার ছেলে ইকবাল হোসেন, মৃত সামাদ বিশ্বাসের ছেলে বাবু, ইমদাদুল হক মিলন, আসাদ, মৃত গহর আলী বিশ্বাসের ছেলে আহাদ হোসেন, মৃত শাহাদৎ বিশ্বাসের ছেলে সাদ্দাম বিশ্বাস, মৃত এরশাদ আলীর ছেলে আব্দল হাকিম, টাকা আজিজের ছেলে শিমুল, দোনার গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে তুহিন ও সুলবলকাঠি গ্রামের নাছিল সরদারের ছেলে এরশাদ।
বজলুর রহমান হত্যার মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর উপজেলার জয়পুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক বজলুর রহমানকে তার দোকান থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তাকে মারপিট করে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয় পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে আটক করা হয়েছে। এরপর তাকে একটি পেন্ডিং মামলায় আটক দেখানো হয় এবং ওসি, আওয়ামী লীগ নেতা অপর আসামিদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। বজলুর রহমান বিএনপি করে এবং সে ক্রসফায়ারের এক নম্বর লিস্টে আছে বলে তারা জানান। ওই রাতে বজলুর রহমানকে থানা অভ্যন্তরে মারপিট করা হয়। এরপর গভীর রাতে তাকে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেগারিতলা নামক স্থানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। পরের দিন সকালে পরিবারকে তার মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। এরপর আসামিরা যোগসাজসে বজলুর রহমানের ময়নাতদন্ত করে লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশ হেফাজতে বজলুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি আদালতে এই মামলার দায়ের করেছেন।
অপরদিকে, আনিসুর রহমান হত্যার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ মার্চ সকালে জয়পুর গ্রামের ফজলুর রহমানকে পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে। এসময় গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে ফজলুকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তৎকালীন মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আজম খান জড়ো হওয়া জনগণকে লক্ষ্য করে গুলি করলে আনিসুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। আসামি বাদল সিংহ গুলি করলে শরিফুল ও আলমগীর দফাদার, আলমগীর গুরুতর জখম হয়। অপর আসামি শিমুল জনগণকে লক্ষ্য করে বোমার ছুড়ে মারার সময় তার হাতের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটলে ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। এমরধ্যে গ্রামের মসজিদের মাইকে হামলার কথা প্রচারের পর পুলিশ ও অপর আসামিরা ফাঁকা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর মামলা করতে না পারায় বর্তমান সময়ে পরিবেশ অনুকুলে আসায় তিনি এ মামলা করেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত রোববার একই অভিযোগে রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি আনিসুর রহমানসহ ৮জনকে আসামি করে মামলা হয়। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের আবু সাঈদ নামে এক যুবককে আটকের পর ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এদিন আবু সাঈদের স্ত্রী পারভীন খাতুন বাদী হয়ে মণিরামপুর আমলি আদালতে এ মামলা করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের খুলনা বিভাগীয় ডিআইজিকে আদেশ দিয়েছেন। #
শিরোনাম:
- যশোর মটর পার্টস সমিতির নির্বাচনে ৫৫ জনের মনোনয়নপত্র জমা
- লোকসমাজের প্রকাশক সুমিতের শ্বশুরের ইন্তেকাল, দাফন সম্পন্ন
- বাংলার মিলন মেলার লোগো উন্মোচন ও নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত যশোরবাসী
- বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে কাজ করছে জাকের পার্টি : মহাসচিব
- চুকনগর বণিক সমিতির নির্বাচনে সাহিদুল সভাপতি বিল্লাল সম্পাদক
- কদমতলা বাজার কমিটির আইয়ুব সভাপতি, রফিকুল সম্পাদক
- সাতক্ষীরায় পাচারকালে দুই পিস স্বর্ণের বারসহ আটক ১
যশোরের সাবেক এসপি আনিসসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মণিরামপুরে ক্রসফায়ারে বজলুর ও আনিসুর হত্যা