বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে যশোর জেলা বিএনপি। বুধবার বিকেলে শহরের টাউন হল ময়দানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির সমাবেশে ঘন্টা তিনেক বৃষ্টিতে ভিজেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা শুনেছেন নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন পর জেলা বিএনপির এ সমাবেশে ব্যাপক সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মাঠে ছিলেন নারী কর্মীরাও। আগে দুপুর থেকে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নামে। জাতীয় পতাকা ও দলের পতাকা নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ স্থলে এসে মুহুমুর্হু স্লোগান দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
সমাবেশে প্রধান অতিথি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘উন্নয়ন তো দয়ার দান নয়। উন্নয়ন কি রিলিপ জনগণের কাছে? উন্নয়ন জনগণের অধিকার। জনগনের টাকায় এই উন্নয়ন হয়। উন্নয়নের কথা বলে একেকটা প্রজেক্টের নামে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। এই লুটপাট কারা করেছে। শেখ হাসিনার সরকার ও তার মাফিয়ারা। এই মাফিয়ার সর্দার কে? শেখ হাসিনা। এই সরকারের কাছে অর্থনীতি বলে কোন নীতি নাই। এই সরকারের আছে শুধু দুর্নীতি। এই মাফিয়া আর দুনীর্তি সরকার ব্যবস্থা জনগণের মঙ্গল তো দূরের কথা, দেশটাও রক্ষা করতে পারবে না।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, অনিয়ম করে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। খালেদা জিয়ার অপর নাম গণতন্ত্র। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে জনগণ মুক্তি পাবে। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে তাদের স্বামী স্ত্রী সম্পর্কটাও ছিন্ন হবে। কোন তালাক হওয়ার সময় পাবে না। কেউ টিকিয়ে রাখতে পারবে না। পাকিস্তানের কাছে আমরা বৈষম্যর শিকার হতাম। পাকিস্তান আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হাত দিয়েছিলো। আমি মানি নাই। যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধ করে আলাদা হয়েছি, স্বাধীন করেছি, নতুন দেশ গড়েছি। কারোও গোলামি করার জন্য না। আপনারা দেশটাকে আরেক জায়গা কলোনি হিসাবে ব্যবহার করবেন, সেটা হবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম ও ছাত্রদের রাস্তায় নামতে হবে। গণঅভ্যুত্থাননের আগে শেখ মুজিব যখন কারাগারে তখন ছাত্র আন্দোলনে ছাত্ররা সে স্লোগান দিয়েছিলেন, সেই স্লোগান এখন আওয়ামী লীগের পছন্দ হয় না। তখন ছাত্ররা স্লোগান দিতো ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো। আগুন জ্বালো রাজপথে। এই আগুন জ্বালিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ছাত্র তরুণকে রাস্তায় নামতে হবে। আপনারা রাস্তায় নামেন। আগেও ছিলাম, এখনো আমরা আছি। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মী তিনি হাতে তালি দিতে বলেন। এসময় মুহুমুর্হু হাতে তালি দেন নেতাকর্মীরা। এই তালি বেগম জিয়ার মুক্তির অগ্রিম অভ্যর্থনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেরা নাজমুল মুন্নী, আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সদস্য অ্যাড. মো. ইসহক, আবদুস সালাম আজাদ, মিজানুর রহমান খান, বাঘারপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই মনা, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফারাজি মতিয়ার রহমান, মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহি টিপু, শার্শা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসান জহির, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন টেনিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন সমাবেশ পরিচালনা করেন।