বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলায় এক হাজার ২৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার কপি নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কপি বই পৌঁছায়নি। ফলে এক জানুয়ারি হচ্ছে না বই উৎসব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাঠ্যবইয়ে সংযোজন-বিয়োজনসহ মুদ্রণ কার্যাদেশ প্রদানে দেরি হয়েছে। এজন্য ডিসেম্বর মাসের মধ্যে স্কুলে স্কুলে বই পৌঁছানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে সরকার দ্রুত শিক্ষাথীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যানুযায়ী, যশোর জেলায় ১ হাজার ২৯০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩৯ জন শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে। নতুন বইয়ের চাহিদা ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫০টি। এর মধ্যে যশোরে অভয়নগর উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা এক লাখ ৭ হাজার ২২ টি। কেশবপুর উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা এক লাখ ১১ হাজার ৭৫০ টি। চৌগাছা উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা এক লাখ ১০ হাজার ৫৯৮ টি। ঝিকরগাছা উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৪ টি। বাঘারপাড়া উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা ৮৯ হাজার ৪০০ টি। মণিরামপুর উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা দুই লাখ ৪ হাজার ২৯১ টি। শার্শা উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা এক লাখ ৭৫ হাজার ৮৬০ টি এবং সদর উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা ৩ লাখ ৯১ হাজার ১৮৫ টি। সব মিলে যশোর জেলার আট উপজেলায় মোট বইয়ের চাহিদা ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫০টি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্যবই ছাপার কাজ পুরোদমে শুরু হয়। দেশের উদ্ভুত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার নভেম্বরে এসে শুরু হয়েছে বই ছাপানোর কাজ। যেভাবে কাজ দ্রুত এগোচ্ছে তাতে ডিসেম্বরের মধ্যে ছাপার কাজ শেষ হবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাসে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন শিক্ষাক্রম থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। বইতে সামান্য পরিমার্জন শেষে কার্যাদেশ দেয়া হয়। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি পুরানো শিক্ষাক্রমে চলছিল। ফলে তাদের বইতে সামান্য পরিমার্জন শেষে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ের চাহিদা চেয়ে জেলা উপজেলা শিক্ষা অফিসে চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে বইয়ের চাহিদা পাঠানোর সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর সেপ্টেম্বরের শেষদিকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। পরবর্তীতে সময়ে অক্টোবরের ৩ তারিখ আবারও দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দরপত্রে অংশ নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরপর তৃতীয় দফায় গত ১৭ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দরপত্রে অংশ নেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। ফলে এ সময়ের মধ্যে সব বই যথাসময়ে ছাপানো ও সরবরাহ অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, যথাসময় শিক্ষাথীদের হাতে পৌঁছে যাবে পাঠ্য বই। ফলে পাঠ পরিকল্পনা তৈরি ও পাঠদানে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না।