বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক জলাধার ও কৃষি জমি। পরিবেশ ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে একের পর এক পুকুর দিঘি ভরাট করা হচ্ছে। খাল বিলের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে আবাসন প্রকল্প করা হচ্ছে। এক যুগে যশোর শহর ও শহরতলীতে ভরাট হয়ে গেছে একশ’র বেশি পুকুর দিঘি। এই পুকুর দিঘি ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে আবাসন। প্রাকৃতিক জলাধার ও কৃষি জমি সংরক্ষণের দাবিতে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক বরার স্মারকলিপি দিয়েছে জনউদ্যোগ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, যশোর পৌর ও আশপাশের এলাকা সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ৩২০টি জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভার ৬টি, জেলা প্রশাসকের ৪০টি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ২৭৪টি পুকুর রয়েছে। ১০ থেকে ১২ বছর আগে জলাশয়ের সংখ্যা আরো বেশি ছিল। শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রায় সব পুকুর তার অস্তিত্ব হারিয়েছে। বিগত এক থেকে দেড়যুগে ভরাট হয়ে গেছে যশোর প্রধান ডাকঘরের সামনের পুকুর, যশোর রেলগেট চোরমারা দীঘি, নিরালা সিনেমা হলের পাশের পুকুর, বেজপাড়ার শ্রীধর পুকুর, আরবপুরের বড় পুকুর, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সড়কের ইসমাইল ডাক্তারের বাড়ির পেছনের বড় দীঘি, ইসলামিয়া স্কুলের পুকুর, পুরাতনকসবা আবু তালেব সড়কের পুকুর, ডাক্তার মোজাম্মেল হোসেনের পুকুর, মন্টুদের পুকুর, নিরিবিলি পুকুর, রাজুদের পুকুর, মুন্সীবাড়ি পুকুর, আয়নাল খাঁর পুকুর, জব্বার বিহারীর পুকুর, গোহাটা পুকুর, রাজবাড়ী বিদ্যুৎ অফিসের সামনের পুকুর, ষষ্ঠিতলাপাড়ায় ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনের পুকুর, খালধার সড়কের পুকুরসহ শহরের ভেতরে থাকা আরো কিছু পুকুর এখন সমতল ভূমি। প¬ট আকারে বিক্রিও হচ্ছে। সম্প্রতি বারান্দিপাড়া এলাকার একটি পুকুর এবং চাঁচড়া এলাকার একটি পুকুরও ভরাট করা হচ্ছে।
শুধু জলাধার নয়, যশোরের হরিণার বিলসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে একের পর কৃষি জমি গ্রাস করা হচ্ছে। হরিণার বিলের ভাতুড়িয়া সড়ক, মাহিদিয়া সড়কের বিভিন্ন এলাকায় ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। বিদ্যমান আইনের তোয়াক্কা না করে বিল উজাড় করছে। বিলভরাট, কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তনসহ ভরাটের কাজে মাটি বহনের সময় সড়ক বিনষ্ট করলেও কোনো ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রাকৃতিক জলাধার ও কৃষি জমি সুরক্ষার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজিবুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনউদ্যোগের আহবায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদ, প্রবীণ সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌলাহ, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা ও জনউদ্যোগ সদস্য মাহবুবুর রহমান মজনু, মহিলা পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. কামরুন নাহার কণা, আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কাজল।