- পথচারিদের ভোগান্তি চরমে
- সড়ক বিভাগের দুঃখ প্রকাশ
স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
ঈদ উল আযহা সামনে রেখে যখন ঘরমুখো মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে ঠিক তখনই শুরু হয়েছে যশোর-খুলনা মহাসড়কে সংস্কার কাজ। হঠাৎ রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হওয়াতে বিপাকে পড়ছেন গাড়িচালক ও পথচারিরা। শহরের রাজারহাট-মুড়লির মোড় এলাকাটি জনগুরুত্বপূর্ণ। এই অংশ দিয়ে শহরে প্রবেশসহ আশে পাশের জেলা নড়াইল, খুলনা, ঝিনাইদহ ও মাগুরাতে চলাচল করে পণ্য ও যাত্রীবাহি পরিবহন। এমনকি ঢাকামুখি বা ঢাকা ফেরত যানবাহনের জন্য জেলার এই অংশ দুটি মূল প্রবেশদ্বার। কয়েকদিন ধরে ঈদ সামনে রেখে রাস্তায় ঘরমুখো যাত্রীর চাপ বেড়েছে। তবে, রাজারহাট-মুডলির মোড় এলাকায় দীর্ঘ যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে ফিরতে পারছেন না পথচারীরা। ফলে উন্নয়ন যন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন তারা। রাস্তায় প্রতিনিয়ত গাড়ি উল্টে পড়ার ঘটনা ঘটছে। তবে, সড়ক বিভাগ বলছেন রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে সংস্কার না করলে হলো না।
সরেজমিন মুড়লির মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় যানবাহনের লম্বা লাইন। সড়ক বিভাগ, ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন মালিক সমিতির লোকেরা যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু ব্যস্ততম সড়ক হওয়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদের আগে সড়ক সংস্কারের কাজে হাত দেওয়ায় পথচারি ও যানবাহন চালকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।
শহিদুল ইসলাম নামে একজন পথচারি বলেন, রাজারহাট-মুড়ুলির মোড় অংশটা চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কিছু দিন ধরে এখানে রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। এই পথেই প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হয়। রাস্তা সংস্কারের জন্য রাস্তার এক অংশ বন্ধ রাখা হয়েছে। দীর্ঘ সময় যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যেতে বা বাসায় ফিরতে পারছি না। অনেক সময় রাজারহাটে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে মুড়ুলির মোড় পার হতে হচ্ছে।
অতিয়ার রহমান নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, সামনে ঈদ এই সময় একটু ভাড়া হয় বেশি। কিছু পয়সা কড়ি ইনকাম না করতে পারলে ঈদ পার করা কষ্ট হয়ে যাবে। রাস্তা মেরামত করার কারণে আমরা ভাড়া টানতে পারছি না। অনেক সময় পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। প্রাণের ভয় নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তাওসান হাবীব বলেন, প্রতিবছর ঈদের ছুটির সময় মুড়ুলির মোড় এলাকায় ঘরমুখো যাত্রীর চাপ থাকে। এখান থেকে যে যার গন্তব্যে যেতে পারেন। এবছর রাস্তার কাজ চলমান থাকায় পথচারীদের ভোগান্তি বাড়বে। সকাল থেকে রাত অবধি কিছু সময় পর পর এখানে যানজট লেগে থাকছে। আমরা স্থানীয় যারা এই রাস্তা দিয়ে চলাচলি করি তারাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এছাড়া এই এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা অতিয়ার রহমান জানান তাদের কষ্টের কথা। তিনি বলেন, একবার যানজট বাঁধলে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগছে রাস্তা ক্লিয়ার করতে। গাড়ি চালকরা কেউ ট্রাফিক আইন মানতে চায় না। আমাদের যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে পথচারীদের সাময়িক চলাচলে ভোগান্তির কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যশোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, যানজটের কারণে আমরা দুঃখিত। রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ কাজ না করে পারছি না। আশা করছি ঈদের আগে মুড়লির মোড় অংশের একটা পার্ট ছেড়ে দিতে পারব।
তিনি আরও বলেন, মুড়লি রেল ক্রসিং থেকে অভয়নগর পর্যন্ত এক সাথে তিনটা রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। মুড়লির অংশটা দুই বছর সময়কালে ২৩৫২ মিটার রাস্তা সংস্কার হবে। সময় কাল দুই বছর থাকলেও আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারির মধ্যে কাজ প্রায় শেষ করা সম্ভব হবে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ হাইওয়ে পুলিশসহ একাধিক টিমের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। এর আগেও এই রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু অভার লোডসহ বিভিন্ন কারণে রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। এবার আমরা রিজেক্ট পেমেন্টে কাজ করছি।