বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে মাদক চোরাকারবারি ও সেবনকারীদের লাগাম টেনে ধরতে জেলা প্রশাসন এবার কঠোর পদক্ষেপের কথা ভাবছে। মাদকের উদ্বেগজনক বিস্তার রোধে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জন্য বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টের পরিকল্পনা করছে জেলা প্রশাসন। রবিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম এ সব কথা জানান।

জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম সভায় বলেন, যশোরে মাদকের বিস্তার তুলনামূলক হারে বেড়েছে। এর মোকাবিলায় পুলিশ প্রশাসনসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে তারা মাদক সেবনকারী কিনা। যদি কেউ মাদক সেবন করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি শহরের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার উপর জোর দেন। এসব এলাকায় মাদক চোরাকারবারি ও সেবনকারীরা সাধারণত জড়ো হয়।

মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জুন মাসের অপরাধ চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, জেলায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে ৭১টি। যা ২০২৪ সালের জুন মাসে ছিল ১০৭টি। মাদক মামলার সংখ্যা কমে যাওয়ায় সভায় উপস্থিত সদস্যরা পুলিশ প্রশাসনের মাদকবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে অনেক নিরাপরাধ মানুষকে পুলিশ মাদক মামলায় জড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমানে জেলাব্যাপী মাদকের ভয়াবহ বিস্তার সত্ত্বেও পুলিশ কেন আসল মাদক চোরাকারবারিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না?

তিনি আরও বলেন, পুলিশের কাছে সুনির্দিষ্ট মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দেওয়া সত্ত্বেও তাদের গ্রেপ্তার না করায় সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম মাদকের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আবুল বাশার বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে এবং বিভিন্ন সময় অভিযানের মাধ্যমে মাদকের বড় বড় চালান আটক করা হচ্ছে। তবে অতীতের তুলনায় অভিযান কিছুটা কম হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ কঠিন। মাদক চোরাকারবারিরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। জেলা পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার যশোরের উপপরিচালক ও পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা, জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিজ্ঞ পিপি অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা জামায়াতের আমির গোলাম রসুল, এনসিপির কেন্ত্রীয় নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েলসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version