বাংলার ভোর প্রতিবেদক
শারদীয় দুর্গোৎসবের মহা অষ্টমীতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যশোর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় কুমারী পূজা। এ বছর কুমারী হিসেবে মাগুরা জেলার নারায়ণপুর এলাকার তাপস চত্রুবর্তীর কন্যা তম্রাসতি চক্রবর্তীর (৫) মাতৃজ্ঞানে পূজা করেছেন ভক্তরা। সকাল থেকে ঢল নামে ভক্তদের। কুমারী অন্বেষার মাধ্যমে দেবীকে আরাধনা করতে পেরে খুশি আশ্রমে আসা ভক্তরা।
যুগাবতার শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের মতে, কুমারী হচ্ছে শুদ্ধতার প্রতীক। দেবী দুর্গার আরেক নাম কুমারী। এ পূজার মাধ্যমে স্বয়ং মা দুর্গা মানুষের ভেতরে বিকশিত হন। তাই শঙ্খ, ঘণ্টা আর উলু ধ্বনির মধ্য দিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গা দেবীকে কুমারী রূপে অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের মধ্যে বাগেরহাট এবং যশোরে এ কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। ফলে যশোরের পার্শ্ববর্তী ও দূরদূরান্তের জেলাগুলো থেকে অনেক ভক্তরা এসেছেন কুমারী পূজার আরাধনায় অংশগ্রহণ করতে।
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে সকাল থেকেই কুমারী পূজা দেখার জন্য নানা বয়সের সব ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের ভিড় জমে। এছাড়া সকালে জেলার ৮ উপজেলার ৭০৮টি মন্দির ও মণ্ডপে মহাঅষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন মণ্ডপে উপোস থেকে ভক্তরা দুর্গা মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন। পূজা শেষে মিশনের পক্ষ থেকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ভক্ত দর্শনার্থীরা নতুন পোশাক পড়ে পূজা মণ্ডপে ভিড় করেন। এ সময় পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ ও ঢাকের বাজনা এবং শঙ্খধ্বনিতে পুরো এলাকায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
নড়াইল থেকে আসা ইন্দ্রজিৎ হালদার বলেন, ‘কুমারী দেবীর আরাধনা করতে তারা কয়েকজন ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে যশোরে এসেছেন। বিশ্ব জগতের মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনাও করেছেন। অলকা রাণী নামে আরেক জন বলেন, স্বপরিবারে প্রতিবছর যশোরে কুমারী পূজা করতে আসি। এ বছরও এসেছি। যেহেতু অনেক জেলা থেকে প্রতিবছর ভক্তরা আসেন, সেহেতু আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়। অনেক ভালো লাগছে।’
যশোর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানপ্রকাশানন্দ মহারাজ বলেন, ‘প্রতিবারের মত এবারও আমরা কুমারী পূজার আয়োজন করেছি। হিন্দু ধর্মীয় মতে, বয়স ভেদে কুমারীর নাম ভিন্ন হয়। এবার ৫ বছর বয়সী তম্রাসতি চক্রবর্তী পূজিত হন। তিনি আরও বলেন, ‘শাস্ত্রমতে এই বয়সে কুমারী পূজিতা হলে শুভশক্তির বিকাশ ও অশুভ শক্তির বিনাস ঘটে। এতে সমাজে অশান্তি দূর হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় থাকে।’
জানা যায়, এ বছর যশোর জেলায় ৭০৮টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হচ্ছে। এরমধ্যে শার্শা উপজেলায় ২৯টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি, সদরে ১৬৫টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, মণিরামপুরে ৯৭টি, অভয়নগরে ১২৬টি, কেশবপুরে ৯৮টি মন্দির। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। রাজনৈতিক দলের উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় পূজা মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কয়েক দফায় মতবিনিময় করছেন। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মন্দির-মণ্ডপে আর্থিক অনুদান ও সনাতন ধর্মাবলম্বী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নারীদের মাঝে শাড়ি বিতণ করা হয়েছে।
##
শিরোনাম:
- এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের হামলার প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন
- নিঃসঙ্গ জীবনে ভালোবাসার স্পর্শ
- বিবর্তন যশোরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিনদিনের উৎসব সমাপ্তবিবর্তন যশোরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিনদিনের উৎসব সমাপ্ত
- বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান পণ্য জব্দ
- আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানের জিম্মায় ওটিপি, জন্ম নিবন্ধনের কাজ বন্ধ ১৫ দিন
- সাবেক এমপি অ্যাড. আফসার আহমেদ সিদ্দিকীর স্মরণসভা
- বেনাপোল কাস্টমসের কর্মকর্তাসহ দুইজনের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন দুদকের
- শার্শার লিটন হত্যা মামলায় আত্মসমর্পণকারী ৯ আসামি কারাগারে